জলপাইগুড়ি: প্রায় প্রায়ই বাড়িতে আসতেন মাসতুতো দাদা। মূক বধির মেয়েকে দেখতে আসতেন আত্মীয়, তাই প্রতিবেশীরা মাথা ঘামায়নি বিষয়টি নিয়ে। কিন্তু এরপরই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে আসে। অভিযোগ ওঠে, মূক ও বধির ওই তরুণীর সঙ্গে সহবাস করেন তাঁর মাসতুতো দাদা। এরপরই সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন ২৪ বছর বয়সী ওই মেয়ে। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এখন পিঠ দেখাচ্ছেন ওই যুবক। এরপরই জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) মহিলা থানার দ্বারস্থ হন ওই তরুণী। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটি। অভিযুক্ত যুবকের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন প্রতিবেশীরা। ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে মহিলা থানার পুলিশ। মেয়েটির সঙ্গে থানায় এসেছেন তাঁর প্রতিবেশীরাও। তাঁরাই জানান, ওই তরুণীর মা, বাবা নেই। এক ভাই রয়েছে। সেই ভাইও বিশেষভাবে সক্ষম। চোখে দেখতে পায় না। প্রতিবেশীদের কথায়, সম্প্রতি ওই তরুণীর বাহ্যিক কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেন তাঁরা। এরপরই ওই তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এক প্রতিবেশী জানান, “ও কথা বলতে পারে না। তবে লিখে সব কিছুই বোঝাতে পারে।” সেইভাবেই ‘দাদার কীর্তি’ সামনে আনেন বলে দাবি এলাকার লোকজনের।
বিষয়টি সামনে আসতেই সুবিচার চেয়ে তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার দ্বারস্থ হন তাঁর প্রতিবেশী ও স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা। সমস্ত বিষয় শোনার পর কোতোয়ালি থানার কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা জলপাইগুড়ি মহিলা থানায় পাঠিয়ে দেন।
এক প্রতিবেশীর কথায়, “আমার পাশের বাড়িরই মেয়েটা। ওর মাসতুতো দাদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। এরপর পাঁচ মাসের সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়ে। মেয়েটা কথা বলতে পারে না, তবে লিখে সবই বোঝাতে পারে। শুনছি ছেলেটার বিয়ে হয়েছিল। সেই বউ চলে যায়। তারপর এই সম্পর্ক।”
জলপাইগুড়ির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক প্রতিনিধি বলেন, “আমাদের কাছে খবর আসে মেয়েটার এমন অবস্থা। এরপরই থানায় আসি। এখানে এসে জানলাম কোনও এক পরিচিতর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়াতেই ওরা অন্তরঙ্গ সম্পর্কে জড়ায়। এখন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এদিকে যে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সে এখন বেঁকে বসেছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার অশান্তিও হয়েছে। এখন নাকি ছেলেটি হুমকি দিচ্ছে মেয়েটি ও তার পরিবারকে। তাই মেয়েটি থানায় এসেছে। আমরাও এসেছি যাতে মেয়েটি বিচার পায়। এই ধরনের অপরাধের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। মেয়েটার মা, বাবা নেই। বিশেষভাবে সক্ষম। ও যেন ১০০ শতাংশ ন্যায় পায়, তাই আমরা এসেছি।”