জলপাইগুড়ি: পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগ উঠেছিল ছাত্রীর বিরুদ্ধে। সেই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল বাড়ি থেকে। পরিবারের দাবি, স্কুলের তরফে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে তাদের মেয়ের নামে। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরেই এই ঘটনা। একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, ওই ছাত্রী তাঁর সুইসাইড নোটে স্কুল ও এক বান্ধবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। জলপাইগুড়ির দেবনগর এলাকার এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে নিহতের পরিবার। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। পরিবারের দাবি, গলায় ফাঁস লাগিয়ে নিজের ঘরেই আত্মহত্যা করে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী শ্রেয়া ঘোষ। স্কুলের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, গত ৭ তারিখ ঘটনাটি ঘটে। এদিকে ৯ তারিখ ছাত্রী আত্মঘাতী হয়। মাঝের দু’দিনে কী ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তাদের।
শ্রেয়ার বাবার কথায়, “আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমাদের ডেকে নিয়ে গিয়ে শিক্ষিকা যেভাবে বলেছেন, সেই অপমানটা ও সহ্য করতে পারেনি। আমার মেয়ের নামে যে অভিযোগ উঠেছে তা একেবারেই ভুল। আমাদের ডাকার পর আমি বললাম, যদি মেয়ে নকল করে তবে তো পরীক্ষার খাতার সঙ্গে নকল থাকবে। নকল দেখান। তখন বলছেন ও নষ্ট করে দিয়েছে। আমার মেয়ে আমার এই অপমান সহ্য করতে পারেনি। আমরা থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। শাস্তি চাই।”
শ্রেয়ার পরিবারের দাবি, স্কুলের শিক্ষিকার অবিবেচকের মতো মন্তব্যই প্রাণ কেড়েছে তাদের ১৪ বছরের মেয়ের। সুইসাইড নোট খতিয়ে দেখে তদন্ত করছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, শ্রেয়া তার সুইসাইড নোটে এক বান্ধবীর নামও লিখেছে। ওই নোটে লেখা ছিল, ‘এ জীবন না রাখাই ভাল’। ঘরের দরজা ঠেলে এরপরই পরিবারের লোকজন ঝুলতে দেখেন মেয়েকে।
যদিও এ প্রসঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুতপা দাসের বক্তব্য, “একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তবে করোনার পর থেকে আমরা বাচ্চাদের কারও কারও মধ্যে একটা অদ্ভুত প্রবণতা লক্ষ্য করছি, ওরা অসৎ উপায় অবলম্বন করে পরীক্ষা দিচ্ছে। কিন্তু স্কুলের বাচ্চাদের তো শুধু পড়াশোনা শেখানো নয়, নৈতিক শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্বও আমাদেরই। আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে যখন কথা বলছি, একটাই কথা বলছি, মারধর করবেন না, বুঝিয়ে বলবেন। ৭ তারিখ ঘটনাটা ধরা পড়ে। আর এটা হয়েছে শুক্রবার। তাই এই দু’দিনের মধ্য়ে কী হল সেটা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। ওর সুইসাইড নোট আমি দেখিনি। তার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বলা এখানে ঠিক হবে না।”