জলপাইগুড়ি (বানারহাট): রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল হোক বা প্রধান বিরোধী বিজেপি, রাজনীতির আঙিনায় তারা সিপিএমকে (CPIM) ধর্তব্যেই রাখে না। কথায় কথায় তুলোধনা করে। বলে, এ রাজ্যে বামেরা সাইনবোর্ডে পরিণত হয়েছে। একুশের বিধানসভা ভোটের পর বিধানসভা থেকে মুছে গিয়েছে বামেরা। গত লোকসভা ভোটেও ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে। তবে ইদানিং বিভিন্ন বিষয়ে আন্দোলনে ফের উড্ডীন লাল পতাকা। বিভিন্ন ইস্যুকে সামনে রেখে পথে নামছে বাম ছাত্র যুবরা। এরইমধ্যে তৃণমূল-বিজেপি ছেড়ে সিপিএমে যোগদান করলেন শতাধিক। রীতিমতো ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে গ্রামপঞ্চায়েত প্রধানের পদত্যাগের দাবি-সহ গ্রামপঞ্চায়েত ও রাজ্য সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল গয়েরকাটার প্রধান পাড়ায়। সেই মিছিল থেকেই প্রায় ১০০ জন তৃণমূল ও বিজেপি ছেড়ে সিপিএমের পতাকা হাতে তুলে নিলেন। রবিবার বানারহাট ব্লকের গয়েরকাটা প্রধানপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে।
সিপিএমে যোগদানকারী অজিত রায়ের দাবি, “আমরা বিজেপি করতাম। আমার সঙ্গে ৩০০-৪০০ জন আজ সিপিএমে যোগ দিল।” অন্যদিকে তৃণমূল ছেড়ে আসা মানিক অধিকারী বলেন, “তৃণমূলের ভাবগতি মোটে ভাল ঠেকছে না। দলের ভিতরে দেখি শুধুই দুর্নীতি। তাই লালপার্টিতে এলাম। আমার সঙ্গে অনেকেই এসেছেন আজ সিপিএমে যোগ দিতে।”
স্থানীয় সিপিএম নেতা বিরাজ সরকারের কথায়, “আমাদের রাজ্যজুড়ে পদযাত্রা হচ্ছে। তারই অঙ্গ হিসাবে সাকোয়াঝোড়া ১ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় আজ পদযাত্রা করলাম। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে এই পদযাত্রা। একইসঙ্গে সারের কালোবাজারি ও কৃষকদের হয়রানি রুখতে আমাদের এই মিছিল। আমাদের এখানে গ্রামপঞ্চায়েতে তৃণমূল বিজেপি হাত মিলিয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে। আমরা মানুষকে সচেতন করতেই এই মিছিল বের করি। ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে নামতেই দেখি শতাধিক তৃণমূল, বিজেপি কর্মী আমাদের পতাকা হাতে নিতে রাস্তায় নেমে এলেন।” তিনি আত্মবিশ্বাসী, আগামী পঞ্চায়েত ভোটে সাঁকোয়াঝোড়ার এই পঞ্চায়েতে লাল পতাকাই উড়বে।
এ নিয়ে বিজেপির কোনও বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি। তা পেলেই এই প্রতিবেদনে যুক্ত করা হবে। তবে তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি মানসরঞ্জন ঠাকুর বলেন, “প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে, এখানে তো উপপ্রধানও জড়িত। উপপ্রধান তো বামফ্রন্টের। যদি এসব ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে নামতে হয়, তো দলের উপপ্রধানের বিরুদ্ধেও তা পেটাক। উপপ্রধানকে আড়াল করছে কেন? এসব সস্তার রাজনীতি করে লাভ নেই। এই মুহূর্তে আমাদের সরকার গ্রামে গ্রামে যে উন্নয়ন করেছে, তাতে মানুষ এমনিই খুশি।” এই যোগদানকেও খুব একটা আমল দিতে নারাজ অঞ্চল সভাপতি। তাঁর কথায়, “আমি ওখানকার নেতৃত্বের বাড়িতেও গিয়েছি। এই ধরনের কোনও খবর নেই। এটা সস্তার রাজনীতি।”