জলপাইগুড়ি: যে কোনও মেলা মানে জিলিপির স্টল থাকবেই। বিশাল বিশাল থালায় থরে থরে সাজানো রসালো এই মিষ্টি। কম বেশি সকলে কিনেও খান। কিন্তু তা বলে সেই জিলিপিতে ফল কিংবা চকোলেটের স্বাদ? আশা করা যায়, খেয়েছেন বলে মনে করতে পারবেন না কেউই। এবার আম, আনারসের জিলিপি বানিয়েই তাক লাগিয়ে দিলেন জলপাইগুড়ির সুকুমার পাল। মনসা পুজো উপলক্ষে প্রতি বছর মেলা বসে জলপাইগুড়ি বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ি প্রাঙ্গনে। সেই মেলাতেই এবার মূল আকর্ষণ ফ্রুট জিলিপি। কাঁচা আম, আনারস, কমলালেবু দিয়ে তৈরি হচ্ছে জিলিপির আড়াই প্যাঁচ।
জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির মনসা পুজো ৫১৩ বছরের পুরনো। এই পুজোর মূল আকর্ষণই হল মেলা। নানা জিনিসের পসরা নিয়ে স্টল বসে। প্রতি সন্ধ্যায় উপচে পড়ে মানুষের ভিড়। খাওয়াদাওয়া, নাগরদোলায় চড়া, বেলুন, চুড়ি আর কত কী বিকিকিনি। এই মেলাতেই প্রতি বছর জিলিপির দোকান দেন জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা সুকুমার পাল। মেলার সময় দারুণ কাটতি তাঁর জিলিপির।
করোনার কাঁটা পার করে এবার ধুমধাম করে মেলা বসেছে। সেই মেলায় নতুন কিছু করার কথা বলেছিলেন সুকুমারবাবুর ছেলে সোমসুশান্ত পাল। নতুন প্রজন্মের সেই পরিকল্পনা যে এভাবে সফল হবে ভাবতেও পারেননি তাঁরা। সোমসুশান্ত বলেন, “বাবা প্রতি বছর শখেই রাবড়ি জিলিপি বানায়। এবার আমি বাবাকে বললাম, দু’বছর পর যখন করছ, আমরা নতুন কিছু চেষ্টা করি। আমরা ভাবলাম এবার মিষ্টির নতুন কিছু করব। তখনই ভাবনা এল জিলিপি যদি ফল দিয়ে করা যায়। এরপরই প্রথমে আমের জিলিপি বানাই। কাঁচা আমের ব্যবস্থা করা হয়। সেটা দিয়ে বানিয়ে বেশ সুস্বাদুই লাগল। এরপর আনারস দিয়েও বানালাম। এরপর নানা রকমের ফল এনে মিশিয়ে একটা জিলিপি তৈরি করলাম। দেখলাম সেটাও বেশ ভালই স্বাদ লাগছে। ঘরে সকলেই বেশ ভাল বলছে। সেই জিলিপিই মেলায় নিয়ে আসি। প্রথমদিনই ভাল সাড়া পাই। এরপর তো মানুষকে দিয়ে কুলোতে পারছি না।”
সোমসুশান্ত জানান, চকোলেট, রাবড়ি, আনারস, আম, কমলালেবু ভাল করে মিক্সড করে জিলিপির লিকুইডের সঙ্গে মিশিয়ে ভেজে রসে চুবিয়ে জিলিপি তৈরি করা হচ্ছে। প্রতি পিস জিলিপির দাম ১০ টাকা। এক প্লেট নিলে ৬ রকমের জিলিপি ৬০ টাকা। মেলায় এসেছিলেন শহরেরই বাসিন্দা সিম্পল সরকার। তিনি বলেন, “একদম নতুন ধরনের জিলিপি খেলাম। এর আগে কোনওদিনও কোথাও খাইনি, শুনিওনি। খুব ভাল লাগল। একদম অন্যরকমের স্বাদ। এবারের মেলায় এটা একটা বিশেষ আকর্ষণ বলতে পারেন।” তবে সিম্পল সরকার, অংশুমান সরকার,মাধবী সিংহদের মতো ক্রেতাদের কথায়, নতুন রকমের খাবার হলেও ৬টা জিলিপি ৬০ টাকা দিয়ে খেতে একটু বেশিই মনে হচ্ছে।