জলপাইগুড়ি: ‘চোর ধরো, জেল ভরো।’ সমতলের উত্তাপে এবার তপ্ত পাহাড়ও! বর্ধিত টাকা ঘোষণা হলেও পাচ্ছেন না চা শ্রমিকরা। কারণ মালিকপক্ষ থেকে শ্রমিক স্তরে সেই টাকা আসায় বাধা দিচ্ছে তৃণমূলই। সোমবার দুপুরে এহেন অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল করে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন সিটু। একগুচ্ছ দাবিদাওয়া সম্বলিত একটি স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয় ডেপুটি লেবার কমিশনারের হাতে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
চা শ্রমিকদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধিত মজুরি ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তাতে মালিকপক্ষ রাজি থাকা সত্বেও চা বাগানগুলিতে সরকার ঘোষিত ১৫ শতাংশ অন্তর্বর্তী মজুরি বৃদ্ধির সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন হয়নি। কারণ ‘অন্তরায়ের নাম তৃণমূল।’ এছাড়াও বটলিফ ফ্যাক্টরির কর্মীদের একগুচ্ছ দাবিদাওয়া রয়েছে অধরা তালিকায়। এই সমস্ত বিষয়কে একত্রিত করেই সোমবার জলপাইগুড়ি শহরজুড়ে ‘চোর ধরো, জেল ভরো’ স্লোগান তুলে পথে নেমেছিল সিটু অনুমোদিত চা বাগিচা মজদুর ইউনিয়নের সদস্যরা। যার নেতৃত্ব দেন সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য তথা চা শ্রমিক নেতা জিয়াউল আলম। তিনি বলেন, ‘চা শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া এবং তাঁদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কারণ মাঝপথে শাসকদলের মদতপুষ্ট কিছু ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা সেই টাকা লুট করছেন। আগে ভাবা হতো শ্রমিকদের ঠকাচ্ছে মালিকপক্ষ। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের টাকা দিতে চাইলেও তা বাস্তবায়ন করতে দিচ্ছেন না শাসকদলের ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা। এই জিনিস আগে কেউ কখনও ভাবেনি। অর্থাৎ এই ধরনের নেতাদের জেলে ভরতে না পারলে শ্রমিকদের নিস্তার নেই।’
বামপন্থীদের তরফে তোলা অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করেছে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়া। তিনি বলেন, ‘সিটুর পক্ষ থেকে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। আমরাই বরং উদ্যোগ নিয়ে চা বাগানে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ কার্যকর করেছি। কিছু ছোট চা বাগানে এখনও এই নির্দেশ কার্যকর হয়নি ঠিকই। তবে তার কারণ রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী বদল হওয়া। তবে সেই বিষয়টিও যাতে দ্রুত বাস্তবায়িত হয় তার জন্য আমরা নতুন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে আলোচনা করব।’
অন্যদিকে, বামেদের তরফে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ডেপুটি লেবার কমিশনার অমিয় দাস। তিনি বলেন, ‘চা শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে আমাদের স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। আমরা সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছি।’