জলপাইগুড়ি: ময়নাগুড়ি ধর্ষণ মামলায় এবার ডিআইজি জলপাইগুড়ির কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এই রিপোর্ট চেয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সঠিক পথে তদন্ত এগোচ্ছে কি না তা দেখা দরকার। সে কারণেই ডিআইজির কাছে স্টেটাস রিপোর্ট চাওয়া হল। আগামী ২০ মে ফের এই মামলার শুনানি হবে। অন্যদিকে এদিন আরও একবার আদালতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত। যদিও অ্যাডভোকেট জেনারেল (AG) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, আদালতের নির্দেশে আইপিএস ডিআইজির তত্ত্বাবধানে তদন্ত চলছে। নির্যাতিতার পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। এমন কোনও নতুন সমস্যা তৈরি হয়নি যার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার দিতে হবে। এদিন আদালতে এজি বলেন, এই মামলা এখন আর ট্রায়াল পর্যায়ে নেই। তদন্ত পুরোদমে চলছে। এ সংক্রান্ত কেস ডায়েরিও জমা দেওয়া হয়েছে।
কী ঘটেছিল ময়নাগুড়িতে? অভিযোগ, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ময়নাগুড়ির ওই নাবালিকা বাড়িতে একা ছিল। সেই সুযোগে এক যুবক তার বাড়িতে নৃশংস অত্যাচার করে। এই ঘটনার পর নাবালিকার চিৎকার চেঁচামেচি শুনে এলাকার লোকজন ছুটে আসেন। অন্যদিকে বিপদ বুঝে পালিয়ে যান অভিযুক্ত। নির্যাতিতার পরিবারের তরফে স্থানীয় থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়। এদিকে এরইমধ্যে গ্রেফতারি এড়াতে আগাম জামিন নিয়ে নেন অভিযুক্ত। ফিরে যান এলাকায়।
এরপর গত ১৩ এপ্রিল ওই নাবালিকার বাড়িতে কয়েকজন যুবক মুখ ঢেকে ঢোকেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেওয়া হয় নির্যাতিতাকে। একইসঙ্গে কথা মতো কাজ না হলে প্রাণে মারারও হুমকি দেয় যুবকের দল। অভিযোগ, ভয়ে ১৪ এপ্রিল গায়ে আগুন লাগিয়ে ফেলে ওই নাবালিকা। প্রথমে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও পরে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাকে। ১২ দিনের লড়াই শেষে ২৫ এপ্রিল ভোরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
এই ঘটনায় প্রথমে নির্যাতিতার বাবা সিবিআই তদন্তের দাবি করেছিলেন। যদিও পরে তিনিই আদালতে গিয়ে বলেন, সিবিআই তদন্ত চাইছেন না। তবে মামলাকারীর আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্তের বক্তব্য ছিল, চাপে পড়ে এই দাবি করছেন নির্যাতিতার বাবা। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘কতটা চাপ থাকলে বাবা ময়নাগুড়ি থেকে আসেন সিবিআই দেবেন না এটা বলতে!’ এদিনের শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ ডিআইজি জলপাইগুড়ির কাছে স্টেটাস রিপোর্ট চলব করে।