ঝাড়গ্রাম: ছোট্ট মেয়েকে স্কুল পাঠিয়েছিলেন মা। দুপুর গড়ালেও মেয়ে বাড়ি ফেরেনি। এরপরই সন্দেহ হয় ওই মহিলার। খুঁজতে বের হন। এদিক ওদিক ঘোরার পর মেয়ের স্কুলের সামনে যান তিনি। স্কুলঘরের পিছনের একটি জানলা দিয়ে উঁকি মারতেই দেখেন মেয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। এই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার অভিযোগ তুলেছেন ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রামের ওই পরিবার। শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে বাচ্চাকে তালা বন্ধ করে রেখে কীভাবে শিক্ষিকারা বাড়ি চলে গেলেন তা নিয়েই সোচ্চার হয়েছেন এলাকার লোকজনও। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল স্কুলের তিন শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।
নয়াগ্ৰাম ব্লকের কলমাপুকুরিয়া পূর্ব শিশু শিক্ষা কেন্দ্র। এখানেই পড়াশোনা করে বছর ছয়ের অঞ্জনা টুডু। বৃহস্পতিবার মা তাকে স্কুলে পাঠায়। কিন্তু ছুটির সময় হয়ে গেলেও অঞ্জনা বাড়ি ফেরেনি। তার মা এর ওর বাড়ি খোঁজ করেও সন্ধান পায়নি মেয়ের। এরপর শিশুটির মা, বাবা, পাড়ার লোকজন সকলে স্কুলের দিকে যান।
অঞ্জনার মায়ের কথায়, স্কুলের পিছনে একটা জানলা রয়েছে। সেখান দিয়ে উঁকি মেরে দেখি মেয়ে ভিতরে পড়ে আছে। এরপরই গ্রামবাসীরা দরজা ভেঙে প্রথম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় কলমাপুকুরিয়া পূর্ব শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের তিন শিক্ষিকা উজ্জ্বলরানি সাহু, বন্দনা কুঁইল্যা ও শকুন্তলা পাইকের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার লোকজন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নয়াগ্ৰাম থানার পুলিশ। ব্লক অফিসেও খবর যায়। সেখান থেকেও আধিকারিকরা আসেন। অঞ্জনার পরিবারের দাবি, মেয়ের কোনও বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলে শিশুটির পরিবার। যদিও তিন শিক্ষিকাই নিঃশর্ত ক্ষমা চান।
এক শিক্ষিকা জানান, “বাচ্চাটা মিড ডে মিলও খেয়েছে। আমি এরপর ব্যাঙ্কের কাজে বেরিয়ে যাই। দুই শিক্ষিকা তালা বন্ধ করছিলেন। আমাদের ১২ ১৩টা তালা দিতে হয় স্কুলে। কোনওভাবে বাচ্চাটা বোধহয় পড়ে আবার ক্লাসরুমে ঢুকে পড়ে। তাতেই এই পরিস্থিতি হয়।” শিক্ষিকারা কেঁদে ভাসিয়ে দেন সকলের সামনে। তাঁদের কথায়, “এই বাচ্চারা আমাদেরই বাচ্চা। ওদের কোনও কষ্ট হলে আমরাও তা মানতে পারি না।”
আরও পড়ুন: Anarul Arrested on Bagtui Massacre: কে আনারুল হোসেন? কেন তড়িঘড়ি গ্রেফতার করালেন মমতা?