আসানসোল: জিতেন্দ্র তিওয়ারি (Jitendra Tiwari) পরের গন্তব্য কোথায়? তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যতই বা কী ? তার সঠিক জবাব এখনও পাওয়া যায়নি। বুধবার জিতেন্দ্র তিওয়ারির ধোঁয়াশা ভরা ফেসবুক পোস্ট ঘিরে জল্পনা শুরু হল আসানসোলে। জিতেন্দ্র তিওয়ারির ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লেখা হল, “রাজনীতিতে ফুলস্টপ বলে কিছু হয় না। রাজনীতি কমা, কোলন, সেমিকলন রয়েছে।” এই হেঁয়ালি শব্দগুলির মধ্যে দিয়েই শুরু হয়েছে নানা জল্পনা।
There is no full stop [.] in politics. It is a series of commas [,] colons [:] semicolons [;] etc.
Posted by Jitendra Tiwari on Tuesday, December 22, 2020
এই ফেসবুক পোস্টের পর প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি আবার তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি পদে ফিরে পাচ্ছেন? আবার ফিরে আসছেন আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক পদে? নাকি আরও কোনও বড় দায়িত্ব পাচ্ছেন দল থেকে? বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দলের জেলা সভাপতি কাউকে করা হয়নি। তেমনই সরকার আসানসোল পুরনিগমের পুরপ্রশাসক পদেও কাউকে বসায়নি। অন্যদিতে জিতেন্দ্র তিওয়ারি দলত্যাগ করে দলে ফিরে এলেও এখনও রয়েছেন ঠান্ডা ঘরে। তবে শোনা যাচ্ছে, পুরনো দায়িত্ব ও ক্ষমতা তিনি ফিরে পাচ্ছেন না।
একইভাবে জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার জন্য বিজেপি নেতৃত্ব শোকজ করেছে মহিলা মোর্চা সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল, সায়ন্তন বসু-সহ উত্তরবঙ্গে এক বিজেপি সাংসদকে। এর মধ্যে জিতেন্দ্র ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলরদের ফেসবুকে দেখা যায় জিতেন্দ্রর ছবি দিয়ে পোস্ট হয়েছে “টাইগার ইস ব্যাক”। আবার জিতেন্দ্র তিওয়ারির পোস্টে রয়েছে, রাজনীতিতে ‘ফুলস্টপ’ বলে কিছু হয় না। তাতপর্যপূর্ণ এই শব্দগুলি নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।
উল্লেখ্য, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর জিতেন্দ্র রীতিমতো সবাইকে চমকে দিয়ে আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসকের পদ থেকে ইস্তফা দেন। সেদিনই কয়েক ঘণ্টা পরে তিনি পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেন। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ডেকে পাঠালেও তিনি যাননি। মোটামুটি নিশ্চিত ছিল যে, তিনি ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরের কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সভায় গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করছেন। শেষ পর্যন্ত তাও হয়নি।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে নতুন সঙ্গীর সন্ধানে বিমল-হারা বিজেপি, পৃথক রাজ্যের আশ্বাসে খুশি জিএনএলএফ
১৮ ডিসেম্বর রাতে আবার শোরগোল ফেলে দিয়ে তিনি নিজেই জানান, কোথাও যাচ্ছেন না। তৃণমূল কংগ্রেসেই থাকছেন। তারপর চারদিন পার হলেও, জিতেন্দ্র তিওয়ারি কী করবেন, তা বুধবার রাত পর্যন্ত পরিষ্কার হয়নি। গত কদিন পুরনিগমের কাজে তিনি আসেননি বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও ছিলেন না। ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, নতুন বছরে নতুন উদ্যোমে নামবেন তিনি। তবে কী ভাবে তা জানা যায়নি। কাউন্সিলর অভিজিত আচার্য্য, অমিত তুলসীয়ানরা তাঁদের পোস্ট নিয়ে স্পষ্ট করে জানাননি। আবার পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী মঙ্গলবারও আক্রমণের সুর চড়িয়েছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধে। জানা গেছে, এদিন জিতেন্দ্র তিওয়ারি কলকাতা এসেছেন। কী কারণে তিনি গেছেন, তা জানা যায়নি। ফোনেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: শুভেন্দু দল ছাড়ার পর নন্দীগ্রামে প্রথম সভা করতে চলেছেন মমতা