ধূপগুড়ি: দক্ষিণে বাঘ, আর উত্তরে ভাল্লুক। পশুদের দাপাদাপিতে রীতিমত নাজেহাল হতে হচ্ছে সাধারণকে।এবার ভাল্লুকের উপদ্রব থেকে বাঁচতে সোমবার রাত থেকেই পাহাড়া দেওয়া শুরু করল বাসিন্দারা। জলপাইগুড়ি জেলার শেষ সীমান্তে অবস্থিত কালিম্পংয়ের সামসিং ফাঁড়ির মণ্ডলগাঁও, খাসমহলে। সেখানকার বাসিন্দারা ভাল্লুকের দাপাদাপিতে অতিষ্ঠ হয়ে শুরু করেছে পাহাড়া।
জানা গিয়েছে, নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন বেশ কয়েকটি পাহাড়ি গ্রামে দিনেরবেলা ও রাতে হিমালয়ান ব্ল্যাক বিয়ার উপদ্রব চালাচ্ছে। গ্রামবাসীদের মুরগী, ছাগল শিকার করছে। শস্য ক্ষেত নষ্ট করছে। এলাকাবাসীদের মধু চাষের জন্য তৈরি করা মৌমাছির ঘর ভেঙে মধু খেয়ে নিচ্ছে ভাল্লুক। সেই কারণে গ্রামবাসীরাও এবার উঠে পড়ে লেগেছে ভাল্লুক ধরার জন্য।
রকিত লেপচা স্থানীয় গ্রামবাসী জানান, “আগে কখনো এরকম ভাবে ভালুকের উপদ্রব ছিল না। ছোট থেকে এত বড় হয়েছি আজ পর্যন্ত এরকম গ্রামের ভেতরে কোনও জীবজন্তু ঢুকতে দেখিনি। এখন ভাল্লুক ঢুকে পড়ছে গ্রামের ভেতরে। পোষা মুরগি নিয়ে যাচ্ছে ,কখনও শস্য নষ্ট করছে আর বাড়ির মধ্যে থাকা মধু চাষ এর বাক্স ভেঙে মধু খেয়ে ফেলছে। যার ফলে রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে আমরা। বনদফতর থেকে গ্রামের মধ্যে খাঁচা এমনকী আমার বাড়ির পাশে খাঁচা পাতা হয়েছে এই ভাল্লুক ধরার জন্য।”
রুপেশ লেপচা মণ্ডলগাঁওয়ে স্থানীয় গ্রামবাসী। তিনি জানান, “বেশ কিছুদিন ধরেই আমাদের এলাকায় ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভাল্লুকের উপদ্রব প্রচুর পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে। এর আগে এরকম ভাবে কখনও ভাল্লুক আমরা দেখিনি রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে আমরা রয়েছি। পোষা মুরগি, ছাগল, খেয়ে চলে যাচ্ছে এবং শস্য পর্যন্ত নষ্ট করে দিচ্ছে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে আমাদের। আমরা গ্রামবাসীরা এখন রাত জেগে গ্রাম পাহাড়া দিচ্ছি। ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে আমাদেরকে পটকা দেওয়া হয়েছে। সেই পটকা ফাটিয়ে রাতের বেলা আমরা ভাল্লুককে দূরে রাখার চেষ্টা করছি। শোনা গিয়েছে, পার্শ্ববর্তী গ্রামেও সকালবেলা ভাল্লুক বেরিয়ে আসছে। এই কারণে বনদফতরকে আমরা বারবার বলার পর গ্রামের মধ্যে খাঁচা বসিয়েছে ভাল্লুক ধরার জন্য।”
পরিবেশ প্রেমি নাফসার আলী জানান, “শুধু পাহাড়েই নয় ডুয়ার্সের সমতলেও নেমে আসছে ভাল্লুক। কখনও গ্রামে আবারো কখনো চা বাগানে ঢুকে পড়ছে। রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে বাসিন্দারা। ভাল্লুক সচরাচর শীতপ্রধান এলাকাতে বসবাস করে। তাদের বাসস্থানে কোন রকম অসুবিধা হয়েছে অথবা প্রাকৃতিক ভাবে কোনও পরিবর্তনের ফলেই হয়তো পাহাড় থেকে ভাল্লুক সমতলের নেমে আসছে। বনদফতরের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি তারা যেন এই বিষয়ে বিশেষ করে নজর দেন। না হলে এই ভাবে ভাল্লুক লোকালয় বেরিয়ে আসলে যেমন সাধারণ মানুষের ক্ষতি হবে।”
আরও পড়ুন: Covid-19 Omicron: ওমিক্রন মোকাবিলায় বুস্টার ডোজই ভরসা, দাবি নয়া সমীক্ষার