মালদা: শিক্ষা দফতরকে না জানিয়ে নিজেরাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করল স্কুল কর্তৃপক্ষ। একইভাবে নিয়োগ করা হয়েছে এক গ্রুপ ডি কর্মীও। আর ওই গ্রুপ ডি কর্মী ও শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হচ্ছে ছাত্রদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার পুখুরিয়া সম্বলপুর অঞ্চল হাইস্কুলে। আদালত ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের নির্দেশে এক শিক্ষক ও গ্রুপ ডি কর্মীদের চাকরি বাতিল হওয়ায় শূন্যস্থান পূরণ করতেই এই পদক্ষেপ করেছে বলে সাফাই স্কুল কর্তৃপক্ষের।
সম্বলপুর অঞ্চল হাইস্কুলে সম্প্রতি নিযুক্ত হওয়া শিক্ষকদের দাবি, বিজ্ঞপ্তি দেখে রীতিমত ইন্টারভিউ দিয়েই তাঁরা নিয়োগপত্র পেয়েছেন। আংশিক সময়ের শিক্ষক হিসাবে তাঁদের বেতন দেওয়া হচ্ছে মাসে ৫ হাজার টাকা। মোট ৩ জন শিক্ষক ও একজন গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্বলপুর অঞ্চল হাইস্কুলের বর্তমানে মোট শিক্ষক সংখ্যা ২১। আগে থেকেই ১৫ জন শিক্ষকের পদ খালি ছিল। এর পর আদালত ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের নির্দেশে ওই স্কুলের দুই গ্রুপ ডি কর্মী এবং একজন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। ফলে স্কুলের পঠন-পাঠন ঠিক রাখতে স্কুলের তরফেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আংশিক সময়ের জন্য শিক্ষক নিয়োগ করা হল।
শিক্ষা দফতরকে না জানিয়ে শিক্ষক নিয়োগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সম্বলপুর অঞ্চল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ আসানুল হক। তবে অভিভাবকদের মতামত নিয়েই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “গ্রুপ ডি কর্মী ও নবম-দশম শ্রেণির এক স্কুলের চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ায় শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তাই অভিভাবকদের সঙ্গে মিটিং করে, তাঁদের মতামত নিয়েই আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাইরে থেকে আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করি।” এই শিক্ষকদের বেতনের জন্য ছাত্রছাত্রীদের থেকে টাকা নেওয়া হলেও এক-এক জনকে খুব বেশি টাকা দিতে হচ্ছে না বলেও তাঁর দাবি। প্রধান শিক্ষকের কথায়, “স্কুলের উন্নয়নমূলক বরাদ্দের জন্য ছাত্রদের থেকে ফি নেওয়া হয় ২৪০ টাকা। তার সঙ্গে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ১১০ টাকা এবং নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের থেকে ১৬০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।” স্কুলের পঠনপাঠন ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজনে অভিভাবকেরা আরও সাহায্য করতে রাজি আছেন বলেও জানান তিনি।
তবে শিক্ষা দফতরকে কেন জানাননি? শিক্ষা দফতর যদি এই পদক্ষেপ মেনে না নেন? প্রশ্নের জবাবে সম্বলপুর অঞ্চল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ আসানুল হক বলেন, “শিক্ষা দফতরকে এখনও বিষয়টি জানানো হয়নি। স্কুলে শিক্ষকের অভাব রয়েছে। শিক্ষা দফতর হয়ত শিক্ষক দেবে। কিন্তু, যতদিন পর্যন্ত না শিক্ষক আসছে, ততদিন স্কুলের পঠনপাঠন ঠিক রাখার জন্যই বাইরে থেকে শিক্ষক নিয়োগ করেছি। তবে DI যদি বিষয়টিতে সহমত পোষণ না করেন, তাহলে এই শিক্ষকদের ছাড়িয়ে দেব।”