স্ত্রী-হত্যার প্রমাণ লোপাটে বাড়ির বাগানই বেছে নিয়েছিলেন মহম্মদ, ‘কাল’ হল দুর্গন্ধ!

Crime News: স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকবছর আগে আলির সঙ্গে বিয়ে হয় কালো বিবির। বিয়ের পর থেকেই বিশেষ কাজকর্ম করতেন না আলি।

স্ত্রী-হত্যার প্রমাণ লোপাটে বাড়ির বাগানই বেছে নিয়েছিলেন মহম্মদ, 'কাল' হল দুর্গন্ধ!
মাটির মধ্যে উদ্ধার দেহ, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 14, 2021 | 3:28 PM

মালদা: কালিয়াচক-কাণ্ডের ছায়া! নিজের স্ত্রীকে খুন (Murder) করে বাড়ির বাগানে পুঁতে সেই বাড়িতেই দিব্য  খেয়েদেয়ে বাস করছেন স্বামী! বাড়ির কাছে দুর্গন্ধ বেরতে শুরু হলেই সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। পুলিশি তৎপরতায়  বাড়ির পেছনের বাগানে মাটি খুঁড়তেই মিলল পচা গলা মহিলার দেহ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে চাঁচোলের স্বরূপগঞ্জে। জানা গিয়েছে মৃতার নাম কালো বিবি। স্ত্রীকে খুন (Murder) করার অপরাধে মৃতার স্বামী মহম্মদ আলিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকবছর আগে আলির সঙ্গে বিয়ে হয় কালো বিবির। বিয়ের পর থেকেই বিশেষ কাজকর্ম করতেন না আলি। কালো বিবির রোজগারেই দিন গুজরান। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তিও হত। লোকের  বাড়ি কাজ করতেন কালো বিবি। কিছুদিন যাবৎ দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না কালো বিবির। মঙ্গলবার, সকালে আচমকা মহম্মদের বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করে। গন্ধ এতই উগ্র হয়ে ওঠে যে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে পড়ে পচাগলা মৃতদেহ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মহম্মদই তাঁর স্ত্রীকে খুন (Murder) করে মাটিতে পুঁতে দিয়েছেন।

স্থানীয় এক প্রতিবেশীর কথায়, “কালো বিবি আমাদের বাড়িতে কাজ করত। গত এক সপ্তাহ ধরে কাজে আসছিল না। আশেপাশে সবাই দেখত, দিব্য আছে মহম্মদ। কেউ বুঝতেই পারিনি আমরা যে ওই বাড়িতে পুঁতে ওখানেই থাকছিল সে। তারপর দেখি এই কাণ্ড। মঙ্গলবার, এলাকায় এত দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করে যে আমরা বাধ্য হয়ে মাটি খুঁড়তে বলি। তারপরেই এই পচাগলা দেহ বেরিয়ে আসে।” চাঁচোল পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই খুন ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে  মৃতার স্বামী মহম্মদ আলিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, মৃতদেহটি অন্তত এক সপ্তাহের পুরনো। জেরায়, স্ত্রীকে খুন করার কথা জিজ্ঞাসাও করেছেন ধৃত মহম্মদ আলি। এমনকী, তিনি ও তাঁর তিন বন্ধু মিলে কালো বিবিকে হত্যা করেন বলে গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন মহম্মদ। পরে, নিজের উপর থেকে সন্দেহ এড়াতে থানায় গিয়ে স্ত্রীর নামে নিখোঁজ ডায়রিও করেন তিনি। তারপর ওই বাড়িতেই থাকছিলেন মহম্মদ। যদিও, ধৃতের চার সঙ্গী এখনও পলাতক। তবে কী কারণে খুন করা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, মাসখানেকের ব্যবধানে কালিয়াচকের ষোলমাইলে নিজের মা-বাবা-বোন-ঠাকুমাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে বাড়ির গুদামেই পুঁতে রাখে আঠারো বছরের আসিফ মহম্মদ। খুনের পর সেই বাড়িতেই প্রায় চারমাস ধরে বসবাস করত আসিফ। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের দাবি,  কালিয়াচকের সেই হত্যাকাণ্ড যেন মনে করিয়ে দেয় ১৯৯৪ সালে কলকাতার বড়তলা থানার বিডন স্ট্রিটের বিশ্বনাথ দত্ত হত্যা মামলা। সেখানে যদিও সম্পত্তির জন্য দাদাকে খুন করেছিলেন কনস্টেবল অলোকনাথ দত্ত। সেখানেও , নিজের দাদাকে খুন করে বাড়ির মধ্যেই ঠাকুরের নতুন বেদী বানিয়ে তার মধ্যেই দেহ গেঁথে দিয়েছিলেন অলোকনাথ। ‘৯৪-এর সেই মামলা সাড়া ফেলেছিল গোয়েন্দা মহলে। আরও পড়ুন: নাকের ডগায় থানা, পুরসভার ভেতরে চলল গুলি! ফের উত্তপ্ত ভাটপাড়া