মালদহ: কারও মুখে তিনি শুনেছিলেন পুলিশ আসছে। একেবারে লুঙ্গি গুটিয়ে দৌড়তে শুরু করেছিলেন বছর পঞ্চান্নর ব্যক্তি। ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড় যাকে বলে! মাঝে বাঁধন খুলে পায়ে পেঁচিয়ে যায় লুঙ্গি। পা হড়কে পড়ে যান ওই ব্যক্তি। তারপরই মৃত্যু। পরে জানা যায় , পুলিশ আসার খবর সবটাই গুজব। আদৌ পুলিশ ঢোকেনি গ্রামে। কিন্তু ততক্ষণে প্রৌঢ়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গ্রামের পরিস্থিতি। দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামবাসীরা। চাঞ্চল্যকর ঘটনা মালদার বৈষ্ণবনগরের কৃষ্ণপুর গ্রামে। মৃতের নাম বদরুদ্দিন শেখ। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। দেহ আটকে চলে বিক্ষোভ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তপ্ত হতে থাকে পরিস্থিতি। এলাকায় রয়েছে বিশাল বাহিনী। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কেন হঠাৎ সব ফেলে দৌড়তে শুরু করেছিলেন ওই প্রৌঢ়?
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, মালদার বৈষ্ণবনগরের কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মুচিটোলায় গত ৪ মে সন্ধ্যাবেলায় নিজেদের মধ্যেই সংঘর্ষে জড়ান গ্রামবাসীরা। নিতান্ত একটা গ্রাম্য বিবাদে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে গ্রাম। এলাকায় হতে থাকে বেপরোয়া বোমাবাজি। তখনকার মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। তারপরই এলাকায় নিয়মিতভাবে টহল দিতে থাকে পুলিশ।
এলাকা থেকে প্রচুর বোমা উদ্ধার হয়েছে। পুলিশি অভিযান চালাতে শুরু করে। ধরপাকড় শুরু হওয়ায় মুচিটোলা গ্রাম গত কয়েকদিন ধরে রীতিমতো পুরুষ শূন্য। কয়েকটি পরিবারেই কেবল পুরুষ ছিলেন। সোমবার বিকালে হঠাৎ করেই গ্রামে গুজব রটে, পুলিশ আসছে।
ফলে সবাই দৌড়তে শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, বদরুদ্দিন বাড়ির সামনেই উঠোনে খাটিয়ে পেতে বসেছিলেন। পুলিশ আসার খবর শোনা মাত্রই পরনের লুঙ্গিটা গুটিয়ে বেঁধে দৌড়াতে শুরু করেন। তখন লুঙ্গি পেঁচিয়ে পড়ে যান তিনি। তাঁকে ডাকলেও আর সাড়া মেলেনি। পরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এরপরই তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। শ’য়ে শ’য়ে মহিলা পুরুষ ভিড় করতে থাকেন এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল বাহিনী। দেহ উদ্ধার করতে গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মৃতদেহ আটকে রেখে চলে বিক্ষোভ।পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে বিশাল বাহিনী গিয়ে দেহ উদ্ধার করে। এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, “কেউ গ্রামে রটিয়েছিলেন পুলিশ আসছে। এমনিতেই এলাকায় বোমা উদ্ধার হওয়ায় ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছিল। পুলিশ যে কাউকে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। তাই পুলিশ আসার খবরে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন।”