মালদহ: বিজেপি নেতার রহস্যমৃত্যু ঘিরে তোলপাড় মালদহের মদনাবতী এলাকা। প্রবল ক্ষোভে ঝাঁটা হাতে ময়দানে নামলেন স্থানীয়রা। সিভিক ভলান্টিয়ারদের ঝাঁটা দিয়ে মারের পাশাপাশি মদনাবতী গ্রামপঞ্চায়েতের ১৮ নম্বর বুথের তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী নাজির সরকারের ভাইপো তৃণমূল কর্মী বাপন সরকারকেও বেধড়ক মারধর করেন এলাকার লোকজন। অভিযোগ, বিজেপি নেতাকে খুন করা হয়েছে। সোমবার তারই প্রতিবাদে বামনগোলা থানার নালাগোলা ফাঁড়ির সামনে বিজেপি ও স্থানীয়দের একাংশ ধরনায় বসেন। পুলিশ বাধা দিতে এলে প্রবল ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিকে ঝাঁটা নিয়ে তেড়ে যান অবস্থানকারীরা। অভিযোগ, সে সময় বাপন সরকার লুকিয়ে দূর থেকে ভিডিয়ো করছিলেন। কয়েকজন তা দেখে ফেলেন। এরপরই মহিলারা ধেয়ে যান বাপনের দিকেও। পালিয়ে নালাগোলা পুলিশ ফাঁড়ির মধ্যে ঢোকার চেষ্টা করেন বাপন। তবে তার আগে কিল, ঝাঁটার বাড়ি খেতে হয় তাঁকেও।
বামনগোলা থানার নালাগোলা পুলিশ ফাঁড়ির মদনাবতী গ্রামপঞ্চায়েত। সেখানকার কন্যাদিঘি গ্রামে রবিবার বুরন মুর্মু নামে এক বিজেপি নেতার দেহ উদ্ধার হয়। ছেলে বিপ্লব মুর্মু, বৌমা শর্মিলা মার্ডি। শর্মিলা আবার তৃণমূলের গ্রামপঞ্চায়েত প্রার্থী ছিলেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, বুরনের ঝুলন্ত দেহ যখন উদ্ধার হয়, গায়ে রক্তের দাগ লেগে ছিল। মেঝেতেও রক্ত পড়ে ছিল। বিজেপির অভিযোগ, বুরনের মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। পিটিয়ে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে।
ঘটনায় ছেলে ও ছেলের বউয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন এলাকার একাংশ। একইসঙ্গে তাঁরা দাবি করেন, এলাকার শাসকদলের বেশ কয়েকজন এতে মদত দিয়েছে। এলাকার একাংশ পারিবারিক বিবাদের কথা বললেও, অপর পক্ষ এতে রাজনীতিরই গন্ধ পেয়েছেন। রবিবার পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে এলে গ্রামবাসী ও বিজেপির কর্মীরা পুলিশকে বাধা দেয়। তাদের দাবি, বুরন যে হামলার শিকার হতে পারেন, এমন আশঙ্কা করে পুলিশকে জানানো হয়। নালাগোলা ফাঁড়িতে জানানো হলেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। এরপরই দেহ উদ্ধার।
পুলিশ বুরনের ছেলে, ছেলের বউকে গ্রেফতারও করেছে। রবিবারের ঘটনার পর সোমবার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু নিহতের বাড়িতে যান। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নালাগোলা ফাঁড়ির সামনে ধরনায় বসেন। একইসঙ্গে বিজেপির আরও একটি দল নালাগোলা রাজ্য সড়ক অবরোধে নামে। ধরনা ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। ঝাঁটা উঁচিয়ে ধেয়ে যান মহিলারা।