মালদহ: কার্শিয়াং থেকে মধ্যমগ্রাম। পাহাড় থেকে সমতল। বিভিন্ন জায়গার প্রশাসনিক বৈঠকে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা পরিকাঠামো থেকে পরিষেবা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দাবিদাওয়া তুলে ধরেছেন। সব জায়গাতেই মুখ্যমন্ত্রীর একটাই জবাব যে বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। তার পর যেন জনপ্রতিনিধিরা আর কোনও নতুন দাবি না করেন। যা পেয়েছেন তা দিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছতে পারেন তাঁরা। তবু তার পরেও দাবিদাওয়া, আবদার এসেছে। এদিন তাই প্রশাসনিক বৈঠকের একেবারে প্রথমভাগেই মমতা শুনিয়ে দেন কেউ যেন অন্য কোনও প্রকল্পের জন্য আলাদা করে কিছু না চান।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “ইনফ্রাস্ট্রাকচার অনেক করে দেওয়া হয়েছে। এখন আর বলবেন না এই চাই, ওই চাই… কারণ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে আমার হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। স্মার্ট কার্ডে খরচ হচ্ছে। কৃষক বন্ধুতে খরচ হচ্ছে। অন্যান্য অনেক প্রোগ্রামে খরচ হচ্ছে। সেই টাকাগুলো আসবে কোত্থেকে? ইনকাম তো নেই।”
তিনি যোগ করেন, করোনার জন্য বিগত দু’ বছরে সরকারের ভাঁড়ার প্রায় ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের বঞ্চনা করে। আমাদের টাকা ঠিক মতো দেয় না। ফলে ইনকামের জায়গাটা করতেও হবে। আমি রাস্তায় ট্যাক্স নেব না। আমি জলে ট্যাক্স নেব না। আমি পাওয়ারের দাম বাড়াব না। বিনা পয়সায় শিক্ষা দেব। বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য দেব। টাকাটা তো আমায় জোগাড় করতে হবে!”
মালদহের প্রশানিক বৈঠক থেকে মমতা বিধায়কদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমার মনে হয় সব চাওয়ার চেয়ে বড় পাওয়া আপনারা পেয়ে গিয়েছেন। জনগণ যাতে ভাল করে প্রকল্পের সুবিধা পায়, সেটা দেখা দরকার।” আর তার পরে তিনি যোগ করেন, “ব্রিজ, ইনফ্রাস্ট্রাকচার আমরা অনেক করেছি। প্রচুর টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এখন আমাকে সামাজিক কর্মসূচিগুলো করতে দিন। আমার মেন ডেস্টিনেশন এখন সামাজিক কর্মসূচি।” যদিও তার পরে এসেছে তার পরেও বাঁধ নিয়ে এক জন প্রতিনিধি আবদার করলে মমতা বলেন, “জলেই যদি সব টাকা চলে যায়, তাহলে আর অন্য কাজ কী করব?”
এদিন প্রশসনিক বৈঠকে বেশির ভাগ জনপ্রতিনিধিই গঙ্গার ভাঙন সমস্যা মমতার কাছে তুলে ধরেন। যা শুনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ব্যাপারটা কেন্দ্রের দায়িত্বে হলেও রাজ্য নিজের দায়িত্ব এড়াতে পারে না। এর জন্য কী করা যায় তিনি ভাবতে বলেন আধিকারিকদের। তাঁর কথায়, “জল কখনও কথা শোনে না। আগুন কখনও কথা শোনে না। এগুলোই প্রবলেম।” এর পর তিনি ফের কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ করে দিল্লিতে লোক পাঠাতে বলেন। জানান, ‘দরকারে ইরিগেশন সেক্রেটারি একবার যাক। গিয়ে কথা বলে আসুক। মালদহ, মুর্শিদাবাদের কথাটা সবাই জানে।’ তিনি যোগ করেন, “আমার মনে হয় সেন্ট্রাল গর্ভমেন্টের এটা নিয়ে ভাবা উচিত। একটা মাস্টার প্ল্যান থাকা দরকার।”