মালদা: জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) থেকে শুরু হলেও জানা জ্বরের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে একাধিক জেলায়। উত্তর থেকে ছড়াতে ছড়াতে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও প্রকোপ বেড়েছে। বেশ কিছু হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কোথাও কোথাও দেখা গিয়েছে, হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে আছে শিশুরা। আবার কোথাও একই বেডে ৩-৪ জন শিশুকে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কেন শিশুদের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত নয়? তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এই পরিস্থিতিতে একই বেডে রেখে চিকিৎসা করার কথা স্বীকার করল মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (Malda Medical College)। বেডের অভাবেই এ ভাবে শিশুদের চিকিৎসা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গতকালের পর আজ ফের নতুন করে বেশ কয়েকজন শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে মালদা মেডিক্যালে। ১৩ জন শিশু আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন মালদা মেডিক্যালের শিশু বিভাগের প্রধান সুষমা শাহু। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন যে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুর সংখ্যার তুলনায় বেডের সংখ্যা অনেক কম। তাই বাধ্য হয়েই এক একই বেডে কয়েকজন শিশুকে একসঙ্গে রেখে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, এই মুহুর্তে মালদা মেডিক্যালে শিশু ভর্তি রয়েছে ১৬৪ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় এই হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তিন জন শিশুর। রাজ্যে অজানা জ্বরে মোট মৃত শিশুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭। শিশু মৃত্যু প্রসঙ্গে, চিকিৎসক সুষমা শাহু জানিয়েছেন তিন জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে, আর মধ্যে দু’জনের নিউমোনিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ও একজনের ডিহাইড্রেশনে। জ্বরের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর আশ্বাস, এই জ্বর নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। এমন জ্বর হয়েই থাকে। বর্ষাকালে এমন রোগ নিয়ে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা প্রত্যেকবারই বেশি থাকে। অন্যদিকে এমএসভিপিও জানিয়েছেন বেডের সংখ্যা খুব কম। তাই একই বেডে কয়েকজন করে রাখতেই হচ্ছে।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজেও দেখা গিয়েছে একই ছবি। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে গতকাল পর্যন্ত অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ১৫০ জন শিশু। কিন্তু, হাসপাতালে শয্যা-সঙ্কট। মিলছে না বেড। মেঝেতেই শুয়ে রয়েছে শিশুর দল। প্রশ্ন উঠছে, যেখানে করোনা মোকাবিলা করতে রাজ্যের সকল হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর, সেখানে কী করে সরকারি হাসপাতালের এমন দূর্বিষহ ছবি উঠে আসছে? তাহলে কি পূর্ব প্রস্তুতি নেয়নি হাসপাতাল?
এ দিকে, ৭ জন শিশুর মৃত্যুর খবর জানা গেলেও স্বাস্থ্য সচিব দাবি করেছেন, এদের কারও মৃত্যুর কারণ অজানা জ্বর নয়। নারায়ণ স্বরূপ নিগম দাবি করেছেন, ‘অজানা জ্বরে মারা যাওয়ার কোনও ঘটনা নেই।’ একই দাবি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। তিনি দাবি করেন, শিশুদের এই জ্বরের প্রকোপ অজানা কিছু নয়। ইনফ্লুয়েঞ্জা বি ও আরএস ভাইরাসের জন্যই এই জ্বর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: হুগলিতে হাসপাতালে ভর্তি ৬৪ শিশু, একজনের ডেঙ্গি ধরা পড়লেও কারও মেলেনি করোনা