হুগলিতে হাসপাতালে ভর্তি ৬৪ শিশু, একজনের ডেঙ্গি ধরা পড়লেও কারও মেলেনি করোনা
Child Fever : এখনও অবধি হুগলি জেলা হাসপাতাল চুঁচুড়া ইমামবাড়ায় ৬৪ জন শিশু ভর্তি রয়েছে।এদের মধ্যে অধিকাংশের ভাইরাল ফিভার ও একজনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে । তবে আশার খবর যে গত এক সপ্তাহে কারোও করোনা ধরা পরেনি।
হুগলি: শিশুদের জ্বরে কাবু হচ্ছে বাংলা। উত্তরবঙ্গে আক্রান্তের সংখ্য়া মাত্রাতিরিক্ত হলেও দক্ষিণবঙ্গে সংখ্যাটা কিন্তু কম নয়। এখনও অবধি হুগলি জেলা হাসপাতাল চুঁচুড়া ইমামবাড়ায় ৬৪ জন শিশু ভর্তি রয়েছে।
এদের মধ্যে অধিকাংশের ভাইরাল ফিভার ও একজনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে । তবে আশার খবর যে গত এক সপ্তাহে কারোও করোনা ধরা পরেনি। চার-পাঁচ জনের স্ক্র্যাব টাইফাস সংক্রমণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা হাসপাতালের সুপার উজ্জ্বলেন্দু বিকাশ মন্ডল।
গতকাল, সন্ধেয় হুগলি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারীক রমা ভুঁইয়া হাসপাতাল সুপার ও ব্লক হাসপাতালের বিএমওএইচদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন। এই বৈঠকে শিশুদের চিকিৎসায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এই সময় যে শিশুই জ্বরের উপসর্গ নিয়ে আসছে তাঁদের করোনা ও ডেঙ্গি পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাশাপাশি জ্বরের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জেলা হাসপাতালের সুপার, “এই সময় আবহাওয়ার পরিবর্তন হওয়ায় অনেক শিশুর জ্বর হয়। যারা মূলত হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে তাদের এই ধরনের ভাইরাল ফিভার দেখা যাচ্ছে। একজনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। আর কয়েকজনের স্ক্যাব টাইফাস । যেহেতু করোনার তৃতীয় ঢেউে শিশুদের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করা হচ্ছে তাই এখনই চিন্তামুক্ত হওয়া যাচ্ছে না। তবে এখনো এক সপ্তাহ দশদিন না গেলে পরিস্কার হবে না। হাসপাতাল গুলোতে শিশু চিকিৎসায় পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট(পিকু) বাড়ানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি এই ঢেউ ভারতে আছড়ে পড়তে পারে। সেই ঢেউয়ে শিশুরাই বিপদসীমায় থাকবে বলে মনে করেছেন গবেষকদের একাংশ। সেই কথা মাথায় রেখে মাস দুয়েক আগেই সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানান, আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। পেডিয়াট্রিক কেয়ার এর জন্য আলাদা ব্যবস্থা জুলাই মাসের মধ্যেই নেওয়া হবে। মুখ্যসচিব সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ১৩০০ পেডিয়াট্রিক আইসিইউ, ৩৫০ এসএনসিইউ এবং ১০ হাজার জেনারেল বেড তৈরি রাখা হচ্ছে। পুরোটাই কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের কথা মাথায় রেখে।
তাছাড়া পিকু-র ব্যবস্থা করা হচ্ছে একাধিক হাসপাতালে। সাধারণ ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য রয়েছে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট, তেমনি কেবলমাত্র শিশুদের একটি অত্যাধুনিক ইউনিট হল পিকু। যেখানে যাবতীয় উন্নত মানের চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকবে বাচ্চাদের চিকিৎসার জন্য। করোনার তৃতীয় ঢেউ সামলাতে এই চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়ার কথা বলেছে স্বাস্থ্য দফতর।
এরপরও রোখা যায়নি বাচ্চাদের উপর সংক্রমণ। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে যে বেড মেলা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলপাইগুড়ি সরকারি হাসপাতালে এক-একটি বেডে দেখা গিয়ছে দু-থেকে তিনজন শিশুকে রাখা হয়েছে। রাজ্যে শিশুমৃত্যুর খবরও উঠে এসেছে কিন্তু সেই অভিযোগকে নস্যাৎ করে রাজ্যের স্বাস্থ্য় সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম দাবি করেন অজানা জ্বরে কারও মৃত্যু হয়নি। যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের অন্য রোগ ছিল। এই বিষয়ে বিশদে রিপোর্ট দেবে বলেও জানান তিনি।