মালদা: জেলায় জ্বরের প্রকোপ অব্যাহত। উত্তরবঙ্গ থেকে অজানা জ্বরের সংক্রমণের ঘটনা সামনে এলেও বাদ পড়েনি দক্ষিণবঙ্গ। একের পর এক জেলায় জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের খবর সামনে আসতে শুরু করে। তখনই চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল প্রশাসনের কপালে। এরপর শিশুদের করোনা সংক্রমণের বিষয় প্রকাশ্যে আসতেই আবারও নতুন করে চিন্তা বেড়েছে সেখানে।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, একদিনেই ৪ শিশুর শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই নিয়ে গত তিনদিনে ১৩ জন শিশু করোনা আক্রান্ত হয়েছে।
অন্যদিকে, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই ১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে শুধুমাত্র মালদা মেডিক্যালেই।
জানা যাচ্ছে, মালদা মেডিক্যাল শিশু ভর্তি রয়েছে ১২৬ জন। এদের মধ্যে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি ২৬ শিশু। গত ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ৫৩ জন শিশু ভর্তি হয়েছে মালদা মেডিক্যালে। অন্যদিকে জেলার অন্যান্য ব্লক হাসপাতাল গুলিতেও শিশু ভর্তি হচ্ছে।
এদিকে, বারবার প্রশাসনের তরফে সচেতন করা হচ্ছে শিশু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য। কিন্তু এরপরও স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না হাসপাতাল চত্বরে।
গত কয়েকদিন আগে অজানা ভাইরাস জ্বরে মৃত্যু হল চার মাসের এক শিশুর। সব মিলিয়ে সেই সময় জেলায় মৃত্যু হয় ৮ শিশুর বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। অজানা ভাইরাস । তার আক্রমণের শিকার আরও একটি শিশু। ৪ মাস বয়েসের ওই শিশু মৃত্যুতে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল মালদহে।
কিন্তু সেই সময় কোনও শিশুরই করোনা সংক্রমণের খবর মেলেনি। তবুও মৃতদের স্যাম্পেল সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছিল নাইসেডে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে জেলায় এই অজানা জ্বরে প্রথম শিশুমৃত্যুর খবর আসে। প্রথম দিনে মোট তিনজন শিশুর মৃত্যু হয়। তবে গত কয়েকদিনে ৯ টি শিশু মারা যায় মাতৃমা ভবনে। এর দু’দিন আগে যে শিশুর মৃত্যু হয় তাঁর রক্ত জনিত অসুস্থতা ছিল বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। তবে বাকি ৮ জনের শারীরিক অসুস্থতার লক্ষ্মণ এক। প্রত্যেকেরই ছিল জ্বর ও প্রবল শ্বাসকষ্ট। করোনার মতো লক্ষ্মণ থাকুলেও, তাঁদের করোনা হয়নি বলেই দাবি মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
এদিকে, আজও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে শিশুমৃত্যুর খবর মেলেছে। গতকাল রাতে এক শিশুর মৃত্যু হয়। এছাড়া গতকাল দুপুরে আরও দুই শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এই তিন শিশুর নিউমোনিয়া এবং জ্বর, শ্বাসকষ্ট ছিল। এদের মধ্যে দুজনের বয়স মাত্র দেড় মাস। আর একজনের বয়স ৯ মাস। মৃত ওই শিশুদের বাড়ি যথাক্রমে বীরপাড়া নকশালবাড়ি এবং মালবাজারে। এছাড়া জানা যাচ্ছে একজন চোপড়ার বাসিন্দা রয়েছে। চোপড়ার ওই শিশু ছাড়াও পেডিয়াট্রিক বিভাগে মারা গিয়েছে ১৯ দিনের একরত্তিও।
আরও পড়ুন: Unknown Fever: এবার ৪ মাসের শিশুর মৃত্যু, মালদহে অজানা জ্বরের শিকার মোট ৮!