মালদহ : গত কয়েকদিন উত্তরবঙ্গে একাধিক জায়গায় প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। ফুলে-ফেঁপে উঠেছে নদী, জল উপচে পড়ছে এলাকার নর্দমাগুলিতে। এহেন পরিস্থিতিতে মালদহে ভেসে আসছে একের পর এক শিশুকন্যা। দশমীর পরই প্রথমে নদী থেকে জীবিত অবস্থায় এক শিশুকন্যাকে উদ্ধার করা হয়েছিল। এরপর উদ্ধার হল শিশুকন্যার দেহ। পরপর দুই শিশুর দেহ উদ্ধার হয়েছে মালদহে। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে এলাকায়। কোথা থেকে দেহ ভেসে এল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত ঘটনার কোনও কিণারা করা যায়নি। প্রশ্ন উঠছে, শিশুকন্যা বলেই কি এ ভাবে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে?
বিগত পাঁচ দিনে গঙ্গা তীরবর্তী এলাকা থেকে তিন শিশু কন্যাকে উদ্ধার করা হয়। যার মধ্যে একজন জীবিত। সোমবার এক শিশুর দেহ উদ্ধার হয়েছে মালদহের মানিকচকের এনায়েতপুর মধ্যপাড়া এলাকা থেকে। এলাকার নর্দমা থেকে ওই দেহ ভেসে উঠতে দেখা যায়। সোমবার দুপুরে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয় এলাকায়। জলে ভরে যায় নর্দমা। সেই সময় গ্রামের নর্দমায় মৃত শিশুকে ভাসতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অনুমান, শিশুর বয়স ৬ থেকে ৭ মাস। নদীর জল থেকে ভেসে এসেছে বলেই সন্দেহ স্থানীয়দের। খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে ছুটে আসে মানিকচক থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত সপ্তাহেই, দুর্গা পূজার দশমীর পর গঙ্গা নদী থেকে উদ্ধার হয় এক শিশুকন্যা। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রচেষ্টায় তাকে উদ্ধার করা হলে দেখা যায়, সে জীবিত আছে। শিশুদের স্নান করানোর পুলে তাকে ভাসিয়ে দিয়েছিল কেউ বা কারা। উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসাও করানো হয়। প্রশাসনের তরফ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে, এই সব ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইউনিসেফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে শিশুপুত্রের থেকে শিশুকন্যার মৃত্যুর হার বেশি। বারবার সমাজের বিভিন্ন স্তরে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হলেও মালদহের মতো ঘটনা চোখে পড়ে বারবার। কখনও আবর্জনার স্তূপে পড়ে থাকে শিশুকন্যা, আবার কখনও ভাসিয়ে দেওয়া হয় নদীতে।