মালদহ: বর্ষার শেষবেলায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে নদী। কালিয়াচকে গঙ্গার ভাঙনের কবলে নদীর পাড়ের রাধা গোবিন্দ মন্দিরের নাটমন্দির, জলের তলায় মন্দিরের গেট। যা নিয়ে এলাকার লোকজনের মধ্যে রীতিমতো উদ্বেগ কাজ করছে। গঙ্গার পারে এই মন্দির এলাকার লোকজনের কাছে অটল বিশ্বাস, ভক্তির উৎসস্থল। প্রকৃতির রোষে এই মন্দিরের একাংশ ভেঙে পড়ায় চোখ ছলছল কারও কারও। এই এলাকা যে ভাঙনপ্রবণ, তা এখানকার মানুষ জানেন। ফি বছর বর্ষা এলে নদীর পার ভাঙে, কপাল ভাঙে এলাকার মানুষের। কিন্তু এবার যে আঘাত লাগছে আবেগেও। তাই মন খারাপও বেশি।
স্থানীয় বাসিন্দা অহল্যা হালদার বলেন, “এখনও অবধি আমাদের বাড়িঘরের ক্ষতি হয়নি ঠিকই। এই মন্দিরের যে ক্ষতি হয়ে গেল সেটাতেই আমাদের সবথেকে বেশি আঘাত লেগেছে। আমাদের মন্দির চলে যাওয়ায় আমাদের সবথেকে বেশি খারাপ লেগেছে। আমাদের যে সবটাই চলে গেল।”
চলতি সপ্তাহেই গঙ্গার ভাঙনে জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে মালদহের কালিয়াচক-৩ ব্লকের পারলালপুর গ্রামের মন্দিরের একাংশ, বিএসএফের অস্থায়ী ক্যাম্প, ধানের জমি। ভাঙনের আশঙ্কায় নদী পাড়ের বাসিন্দাদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। পারদেওনাপুর শোভাপুর গ্রামপঞ্চায়েতের পারলালপুর সীমান্তবর্তী গ্রাম। এখান থেকেই গঙ্গা আর পদ্মা আলাদা হয়েছে।
এই গ্রামের উল্টোদিকেই মুর্শিদাবাদ জেলার ধুলিয়ান। দুই জেলার মাঝে বয়ে গিয়েছে গঙ্গা। ফেরি চলাচল করে দুই জেলার মাঝে। আর সেই পারলালপুরে নদীর ধারে রয়েছে রাধাগোবিন্দ মন্দির ৷ যেখানে প্রতি বছর দুর্গাপুজোও হয়। এ বছরও হয়েছে। বুধবার দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের পর গোটা গ্রাম যখন ঘুমিয়ে, তখন হঠাৎই ভোররাতে হইচই। বিএসএফের জওয়ানদের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন এলাকার লোকজন। দেখেন গঙ্গার জল ধাক্কা মারছে মন্দিরের গায়ে, ভেঙে পড়ছে মন্দিরের একাংশ।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বরুণকুমার সরকার বলেন, “রাত দু’টো থেকে ভাঙন শুরু হয়। আমরা ভোর চারটেয় জানতে পারি। জওয়ানদের ক্যাম্পও তো গঙ্গার ভাঙনে বসে গিয়েছে। ওদের চিৎকারেই ঘুম থেকে উঠে দেখি মন্দির নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে ৷ আজ আমাদের বাড়ি, ঘরের ক্ষতি হয়নি ৷ তবে মন্দির নদীতে চলে যাওয়ায় আমরা খুব দুঃখিত ৷ আমাদের ঘরবাড়িও সরানো শুরু হয়েছে ৷ হঠাৎ করেই রাধা গোবিন্দ মন্দিরের নাটমন্দির, বিএসএফ ক্যাম্প বসে গিয়েছে ৷ এখনও মন্দিরের গায়ে জল ধাক্কা দিচ্ছে।”
এই ভাঙন নিয়ে জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়ার মন্তব্য, “ভোরে পারলালপুরে গঙ্গার ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রকৃতির উপর কারও হাত থাকে না ৷ ভাঙনে ওই গ্রামের রাধাগোবিন্দ মন্দিরের কিছুটা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ সেচ দফতর ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে ৷ তবে ভাঙন কতটা আটকাতে পারব, তা জানি না ৷ আমাদের অনুমান, ভাঙন এখন বন্ধ থাকলেও আবার শুরু হবে ৷ কালিয়াচক-৩ ব্লকের বিডিও গিয়েছেন সেখানে। ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদীর ধারে যে ঘর, তা সরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
পারদেওনাপুর শোভাপুর গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান সুলেখা চৌধুরি জানান, “মন্দিরটি এতদিন বাঁচিয়ে রাখা গিয়েছিল। কিন্তু দশমীর গভীর রাতের ভাঙনে মন্দিরের সামনের অংশ তলিয়ে গিয়েছে। মন্দিরের বাকি অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা নজর রাখছি।” কালিয়াচক-৩ বিডিও মামুন আখতার বলেন, “রাতে আচমকাই ভাঙন শুরু হয়। যার ফলে রাধা গোবিন্দ মন্দিরের সামনের কিছু অংশ ভাঙনের কবলে পড়ে। এলাকায় প্রশাসনিক লোক পাঠানো হয়েছে। সব সময় নজর রাখা হচ্ছে।”
এই ভাঙনে ধীরে ধীরে রাধা গোবিন্দ মন্দিরের সামনের অংশ ভেঙে তলিয়ে যায় গঙ্গায়। ফাটল ধরেছে গোটা মন্দির চত্বরে। মন্দিরের সামনের নাটমন্দিরও তলিয়ে গিয়েছে। রাধা গোবিন্দ মন্দির-সহ শিব মন্দির ও দুর্গা মন্দির যে কোনও সময় তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা চৌধুরী।
মালদহ: বর্ষার শেষবেলায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে নদী। কালিয়াচকে গঙ্গার ভাঙনের কবলে নদীর পাড়ের রাধা গোবিন্দ মন্দিরের নাটমন্দির, জলের তলায় মন্দিরের গেট। যা নিয়ে এলাকার লোকজনের মধ্যে রীতিমতো উদ্বেগ কাজ করছে। গঙ্গার পারে এই মন্দির এলাকার লোকজনের কাছে অটল বিশ্বাস, ভক্তির উৎসস্থল। প্রকৃতির রোষে এই মন্দিরের একাংশ ভেঙে পড়ায় চোখ ছলছল কারও কারও। এই এলাকা যে ভাঙনপ্রবণ, তা এখানকার মানুষ জানেন। ফি বছর বর্ষা এলে নদীর পার ভাঙে, কপাল ভাঙে এলাকার মানুষের। কিন্তু এবার যে আঘাত লাগছে আবেগেও। তাই মন খারাপও বেশি।
স্থানীয় বাসিন্দা অহল্যা হালদার বলেন, “এখনও অবধি আমাদের বাড়িঘরের ক্ষতি হয়নি ঠিকই। এই মন্দিরের যে ক্ষতি হয়ে গেল সেটাতেই আমাদের সবথেকে বেশি আঘাত লেগেছে। আমাদের মন্দির চলে যাওয়ায় আমাদের সবথেকে বেশি খারাপ লেগেছে। আমাদের যে সবটাই চলে গেল।”
চলতি সপ্তাহেই গঙ্গার ভাঙনে জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে মালদহের কালিয়াচক-৩ ব্লকের পারলালপুর গ্রামের মন্দিরের একাংশ, বিএসএফের অস্থায়ী ক্যাম্প, ধানের জমি। ভাঙনের আশঙ্কায় নদী পাড়ের বাসিন্দাদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। পারদেওনাপুর শোভাপুর গ্রামপঞ্চায়েতের পারলালপুর সীমান্তবর্তী গ্রাম। এখান থেকেই গঙ্গা আর পদ্মা আলাদা হয়েছে।
এই গ্রামের উল্টোদিকেই মুর্শিদাবাদ জেলার ধুলিয়ান। দুই জেলার মাঝে বয়ে গিয়েছে গঙ্গা। ফেরি চলাচল করে দুই জেলার মাঝে। আর সেই পারলালপুরে নদীর ধারে রয়েছে রাধাগোবিন্দ মন্দির ৷ যেখানে প্রতি বছর দুর্গাপুজোও হয়। এ বছরও হয়েছে। বুধবার দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের পর গোটা গ্রাম যখন ঘুমিয়ে, তখন হঠাৎই ভোররাতে হইচই। বিএসএফের জওয়ানদের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন এলাকার লোকজন। দেখেন গঙ্গার জল ধাক্কা মারছে মন্দিরের গায়ে, ভেঙে পড়ছে মন্দিরের একাংশ।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বরুণকুমার সরকার বলেন, “রাত দু’টো থেকে ভাঙন শুরু হয়। আমরা ভোর চারটেয় জানতে পারি। জওয়ানদের ক্যাম্পও তো গঙ্গার ভাঙনে বসে গিয়েছে। ওদের চিৎকারেই ঘুম থেকে উঠে দেখি মন্দির নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে ৷ আজ আমাদের বাড়ি, ঘরের ক্ষতি হয়নি ৷ তবে মন্দির নদীতে চলে যাওয়ায় আমরা খুব দুঃখিত ৷ আমাদের ঘরবাড়িও সরানো শুরু হয়েছে ৷ হঠাৎ করেই রাধা গোবিন্দ মন্দিরের নাটমন্দির, বিএসএফ ক্যাম্প বসে গিয়েছে ৷ এখনও মন্দিরের গায়ে জল ধাক্কা দিচ্ছে।”
এই ভাঙন নিয়ে জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়ার মন্তব্য, “ভোরে পারলালপুরে গঙ্গার ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রকৃতির উপর কারও হাত থাকে না ৷ ভাঙনে ওই গ্রামের রাধাগোবিন্দ মন্দিরের কিছুটা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ সেচ দফতর ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে ৷ তবে ভাঙন কতটা আটকাতে পারব, তা জানি না ৷ আমাদের অনুমান, ভাঙন এখন বন্ধ থাকলেও আবার শুরু হবে ৷ কালিয়াচক-৩ ব্লকের বিডিও গিয়েছেন সেখানে। ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদীর ধারে যে ঘর, তা সরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
পারদেওনাপুর শোভাপুর গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান সুলেখা চৌধুরি জানান, “মন্দিরটি এতদিন বাঁচিয়ে রাখা গিয়েছিল। কিন্তু দশমীর গভীর রাতের ভাঙনে মন্দিরের সামনের অংশ তলিয়ে গিয়েছে। মন্দিরের বাকি অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা নজর রাখছি।” কালিয়াচক-৩ বিডিও মামুন আখতার বলেন, “রাতে আচমকাই ভাঙন শুরু হয়। যার ফলে রাধা গোবিন্দ মন্দিরের সামনের কিছু অংশ ভাঙনের কবলে পড়ে। এলাকায় প্রশাসনিক লোক পাঠানো হয়েছে। সব সময় নজর রাখা হচ্ছে।”
এই ভাঙনে ধীরে ধীরে রাধা গোবিন্দ মন্দিরের সামনের অংশ ভেঙে তলিয়ে যায় গঙ্গায়। ফাটল ধরেছে গোটা মন্দির চত্বরে। মন্দিরের সামনের নাটমন্দিরও তলিয়ে গিয়েছে। রাধা গোবিন্দ মন্দির-সহ শিব মন্দির ও দুর্গা মন্দির যে কোনও সময় তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা চৌধুরী।