মালদহ: বিহারে করোনায় মৃতদের ‘লাশ’ গঙ্গায় ভেসে মালদহে (Maldah) ঢুকতে পারে। নবান্ন থেকে সচেতন বার্তা পেয়ে ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যেই। শুরু হয়েছে নাকা চেকিংও। কিন্তু এবার সে আতঙ্ক মাছ ভাতে বাঙালির হেঁশেলেও ঢুকে গেল। গঙ্গা থেকে মাছ ধরে সে মাছ আপাতত খাওয়া বন্ধ। এই আবেদন নিয়ে এলাকায় চলছে মাইকিং।
লাশ ভেসে আসার আতঙ্কে ইতিমধ্যেই পতিতপাবনী গঙ্গায় স্নান বন্ধ করেছেন মানিকচকের অধিকাংশ মানুষ। আজকাল মানিকচক ও পঞ্চানন্দপুর গঙ্গার ঘাট প্রায় ফাঁকাই থাকে। কমেছে গঙ্গায় মাছ ধরাও। মালদহের বাজারে তো গঙ্গার মাছ আসছেই না। যে টুকু আসছিল এবার তাও বন্ধ হল বলে!
আরও পড়ুন: আব্বাসের বিধায়ক ভাইকে ঘিরে গো ব্যাক স্লোগান, উত্তপ্ত ভাঙড়
মানিকচক গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় মাইকিং শুরু হয়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে, ‘এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে শোনা যাচ্ছে গঙ্গা থেকে মৃতদেহ ভেসে আসছে। সন্দেহ করা হচ্ছে দেহগুলি করোনা রোগীর। তাই এলাকার মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে তারা যেন গঙ্গাস্নান কিংবা গঙ্গাজল পান করা থেকে বিরত থাকেন।’ গঙ্গায় নামাই যদি বন্ধ হয়ে যায় মাছই ধরা হবে কী করে? এই চিন্তায় কপালে হাত মানিকচকের মাছ চাষিদের। চিন্তা বেড়েছে মাছ বিক্রেতাদেরও।
মানিকচকের গঙ্গায়, উত্তরপ্রদেশ-বিহার থেকে করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ ভেসে আসার সম্ভাবনায় জেলা প্রশাসনকে সতর্ক করেছিল নবান্ন। এখনও ঘাটে পুলিশের নজরদারি চলছে। সতর্ক করা হয় পঞ্চায়েত ও স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। বিশেষ করে জেলে, মাঝিদের। যাতে মৃতদেহ দেখতে পেলেই তাঁরা প্রশাসন বা থানায় খবর দেন। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও মৃতদেহ ভেসে আসতে দেখা যায়নি। মৃতদেহ ভেসে না এলেও হঠাৎ করে এলাকায় এমন মাইকিং ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সঙ্গী নানা গুজবও। ফলে গঙ্গার আশেপাশে যাওয়া বা গঙ্গার জল বিশেষ করে মাছ খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন এলাকার লোকজন।
আরও পড়ুন: ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাড়িতে পড়ে করোনা রোগীর দেহ, চরম নাকাল পরিবার
এর জেরে বিপাকে মাছ বিক্রেতারা। মাছের বাজারে ঢুকতে অনীহা ক্রেতাদের। ফলে বাজারেই পড়ে থাকছে মাছ। অন্যান্য সময় যে মাছের দর ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা প্রতি কেজি থাকে, সেই মাছ এখন ১০০ টাকাতেও নিতে চাইছেন না মানুষ। মানিকচক ঘাটের কাছে হীরানন্দপুর-সহ বেশ কিছু বাজারে মাছ ব্যবসায়ীদের বিক্রিবাটা একেবারে খারাপ। পাইকারি বাজারের অবস্থাও খারাপ। আসছেন না আড়তদার, বড় ব্যবসায়ীরা। তবে এ ব্যাপারে মানিকচকের বিডিও জয় আহমেদ এবং পুলিশের তরফে কোনওরকম গুজব আতঙ্ক ছড়াতে নিষেধ করা হয়েছে। কোনও গুজব বা আতঙ্ক ছড়ালে প্রয়োজনীয় আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানানো হয়েছে।