Malda-China: বাংলাদেশের অস্থিরতার সুযোগ, এবার চিনের নজর পড়ল বাংলার মালদহে

Malda-China: রিপোর্ট অনুযায়ী, গত আর্থিক বছরে ভারতের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক পার্টনার হিসাবে উঠে এসেছে চিন। যা আগে ছিল আমেরিকার দখলে। GTRI এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে চিন ও ভারতের মধ্যে ১১৮.৮ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে।

Malda-China: বাংলাদেশের অস্থিরতার সুযোগ, এবার চিনের নজর পড়ল বাংলার মালদহে
মালদহ চিনের ব্যবসায়ীক সম্পর্কImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 16, 2024 | 5:28 PM

মালদহ: চিনের নজর এবার মালদহে! বাংলাদেশের এই উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই এই বিষয়টা শুনলে বুক কেঁপে উঠবে। কিন্তু নাহ! এর আক্ষরিক অর্থ অত্যন্ত সদর্থক। বাংলাদেশের এই অস্থিরতা, আর সেকারণে রফতানিতে প্রভাব। আর সে কারণেই চিনের সঙ্গে বাংলার ব্যবসায়ীক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হল। তেমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।  চিনের নজর মালদহের আম গাছের দিকে। যার জন্য ইতিমধ্যেই চিনে আলোচনা সেরে এসেছেন মালদহ প্রতিনিধি দল।

একদিকে যখন উত্তপ্ত বাংলাদেশ। রোজ ভারতের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি, দুই রাষ্ট্রের বাগযুদ্ধ। তার মধ্যে চিনের তরফ থেকে এই বার্তা।  কূটনৈতিক দিক থেকে ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত দ্বন্দ্ব থাকলেও, তার কোনও প্রভাব নেই ব্যবসায়িক সম্পর্কে। যদিও ভারত চিনের ওপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু দুই দেশের মধ্যে যে বাণিজ্য বাড়ছে, এটাও সত্যি।

রিপোর্ট অনুযায়ী, গত আর্থিক বছরে ভারতের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক পার্টনার হিসাবে উঠে এসেছে চিন। যা আগে ছিল আমেরিকার দখলে। GTRI এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে চিন ও ভারতের মধ্যে ১১৮.৮ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে। তুলনায় সামান্য পিছিয়ে আমেরিকা। ভারত ও আমেরিকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হয়েছে ১১৮.৩ বিলিয়ন ডলার। আর এরই মধ্যে কিছুটা হলেও জায়গা করে নিচ্ছে মালদহ।

আর সৌজন্য মালদহের আম নয়, আম গাছ। কারণ, আম গাছ থেকে যে প্লাইউড তৈরি হয়, তা পৃথিবীর কোনও গাছ থেকেই তৈরি হয় না। এমন উৎকৃষ্ট মানের প্লাইউড নজর কেড়েছে চিনের। শুধু নজর কাড়া নয়, শুরু হয়ে গিয়েছে ব্যবসায়িক লেনদেনও। ইতিমধ্যেই বছরে ১০০ কোটি টাকার বেশি টার্ন ওভার শুধুমাত্র মালদহ জেলা থেকেই। কারণ গোটা দেশে মালদহেই আম গাছের বা বাগানের পরিমাণ সব থেকে বেশি। মাত্র বছর দুই তিনের মধ্যেই চিনের এই চাহিদার জন্যে মালদহে আম গাছের প্লাইউড কারখানা বহু গড়ে উঠেছে।

কিন্তু চিনে মালদার আম গাছের প্লাইউড এর চাহিদা কেন? কেনই বা এক্সপোর্ট করার উদ্যোগ ক্রমশ বাড়ছে? এর কারণ, আম গাছ থেকে যে প্লাইউড তৈরি হয় তা সহজেই যেমন খুশি আকৃতি দেওয়া সম্ভব। আবার শক্তপোক্তও যা অন্যান্য প্লাইউড থেকে অনেক বেশি। তাই এই প্লাইউড দিয়ে বিভিন্ন রকমারি আসবাব যেমন বানানো যায়, তেমনই কাজে লাগে নতুন প্রযুক্তির বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করতেও। খুব পাতলা মসৃণ প্লাইউড হিসাবে মালয়েশিয়ার প্লাই বিখ্যাত ছিল। কিন্তু এই প্লাই সেই সব কাজে লাগে না। অন্যদিকে অন্য গাছ থেকে বিশেষ করে ইউক্যালিপটাস থেকে যে প্লাই তৈরি হয় তাও আবার যেমন খুশি আকৃতি দেওয়া যায় না, কারণ সেই প্লাই বাঁকানো মোড়ানো সম্ভব নয়। অথবা আম গাছের প্লাই দিয়ে সদৃশ্য আরাম দায়ক চেয়ার, সোফা, সব কিছুই করা সম্ভব। আর চিনে এই প্লাই এর তৈরি সামগ্রীর চাহিদা খুব বেশি। একই সাথে তাদের বিভিন্ন কাজকর্মে এই প্লাই এর প্রয়োজনও খুব বেশি। তাই ইতিমধ্যেই বার দুই তিন বার শুধুমাত্র প্লাই নিয়ে ব্যবসার স্বার্থেই মালদহ থেকে চিনে ঘুরে এসেছে মালদহের প্রতিনিধি দল। যাঁদের মধ্যে বিশেষজ্ঞ ছাড়াও রয়েছেন এই ব্যবসা ও কারখানার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা।

চিনে যাওয়া প্রতিনিধিদের মধ্যে একজন দুলাল সরকার বলেন, “মালদহে এরকম অনেক কারখানা আছে। দিল্লি, বম্বে তো যাই। চিন-সহ সারা পৃথিবীতে যায়। চিনের মার্কেট অনেক বড়। চিনে আম গাছ নেই, আম গাছ লাগাচ্ছে। মালদহ, মুর্শিদাবাদ থেকে কেবল ১০০ কোটি টাকার ওপর ব্যবসা হয়।”

চেম্বার অফ কর্মাসের সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ড বলেন, “বাংলাদেশের অস্থিরতার জন্য রফতানির পরিমাণ কমে গিয়েছে। ভারত চিনের ব্যবসায়ীক সম্পর্ক উন্নতি হয়েছে। দিল্লি হয়ে আম কাঠ হয়ে যাচ্ছে চিনে। অনেকে খুবই চাহিদা। গত বছরে ১০০ কোটি টাকার ওপর প্লাইউড দিল্লি পাঠিয়েছি। এই ব্য়বসা আরও সুদৃঢ় করার চিন্তাভাবনা চলছে। কেন্দ্রীয় সরকার এগিয়ে আসবেই। রাজ্য সরকারও সচেষ্ট।”