Malda: ওঁরা সকলেই ‘ডাক্তার’, কেউ ডেন্টিস্ট, কেউ মেডিসিনের! ১২ বছর ধরে হাটে হাটে চেম্বার, যোগ্যতা শুনলে চোখ কপালে উঠবে
Fake Doctor: গ্রামের হাটেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পসরা সাজিয়ে বসেছেন এই ভুয়ো চিকিৎসকরা। এরকমই একটি তথাকথিত চেম্বারে ঢুকে দেখা গেল, এক জনের দাঁতের চিকিৎসা করছেন, তবে তাঁর ডেন্টিস্টের কোনও ডিগ্রি নেই। আবার যে ওষুধ বিক্রি করছেন, তার গুণগত মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠছে।

মালদহ: এক নয়, একাধিক, বরং বলা যেতে পারে এক দল! অবাধে চেম্বার খুলে চিকিৎসা করছেন ওঁরা। তবে তাঁদের না আছে ডিগ্রি, না ডিপ্লোমা, না সার্টিফিকেট। ডাক্তারি ডিগ্রি তো দূরের কথা, ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতাটুকুও নেই। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকে গোবরাঘাট হাটে ধরা পড়ল ভয়ঙ্কর ছবি। অথচ ক্যামেরা দেখলেই তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, তাঁরা চিকিৎসক, কিন্তু পড়াশোনা করে নন। দেখেশুনে শিখেই নাকি ডাক্তারি করছেন তাঁরা। আনাচে কানাচে বিভিন্ন চেম্বার থেকে শুরু করে গ্রামের হাট, সর্বত্রই গিজ গিজ করছে এই সব ভুয়ো ডাক্তার।
গ্রামের হাটেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পসরা সাজিয়ে বসেছেন এই ভুয়ো চিকিৎসকরা। এরকমই একটি তথাকথিত চেম্বারে ঢুকে দেখা গেল, এক জনের দাঁতের চিকিৎসা করছেন, তবে তাঁর ডেন্টিস্টের কোনও ডিগ্রি নেই। আবার যে ওষুধ বিক্রি করছেন, তার গুণগত মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠছে।
আবার নিজেদের চিকিৎসক বলে পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তিরা নিজেরাই বলছেন, তাঁদের কাছে কোন কাগজ নেই। তাঁরা ডাক্তারি দেখে শিখেছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এ সব কি প্রশাসনের নজরে পড়ছে না? কেন পদক্ষেপ করছে না স্বাস্থ্য দফতর? শুধু এই হাট নয়। পার্শ্ববর্তী তুলসিহাটা, চাঁচল, সামসি সব হাটেই এই চিকিৎসকদের রমরমা। কবে এই সব চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন।
এরকমই এক ভুয়ো চিকিৎসক রামজুদ্দিন বলেন, “হাটে হাটেই বসি। ১২-১৩ বছর ধরে এভাবেই তো চিকিৎসা করছি। কখনও ৪০ টাকা নিই, কখনও ৫০ টাকা। আমরা গরিবদের চিকিৎসা করছি।”
হায়াত নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “ওনাদের কাছে আমি তো কোনওদিন দেখাইনি। ওনাদের ডিগ্রি নেই। ওই প্র্যাকটিসের ওপরেই ডাক্তারি করেন। তবে পাবলিককেও তো বুঝতে হবে। বুদ্ধিমান হতে হবে। নিজের স্বাস্থ্য, নিজের ভালটা তো নিজেদেরই বুঝতে হবে।”
কাদের মদতে কোন রকম ডিগ্রি শিক্ষা ছাড়া এরা চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন? এই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। জেলা বিজেপি সম্পাদক রুপেশ আগরওয়াল বলেন, “যে সরকারটাই ভুয়ো, স্বাভাবিকভাবেই সেই রাজ্যের চিকিৎসক, শিক্ষক সবই ভুয়ো হবে। হাটে হাটে চিকিৎসক ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাঁরা আবার চিকিৎসাও করছেন, এসব বাংলাতেই হয়!”
আইএনটিটিইউসি-র ব্লক সভাপতি সাহেব দাস বলেন, “বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনা হচ্ছে। সঠিক পদক্ষেপ করা হবে। যাঁরা এরকম করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করা হবে। আর বিজেপির তো কাজই কটাক্ষ করা।”

