মালদা: তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল যেন থামতেই চাইছে না। পঞ্চায়েত নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই চড়ছে এই চাপানোতরের পারদ। আরও একবার মালদায় প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। সৌজন্যে মালদার তৃণমূল নেতা তথা জেলার কো-অর্ডিনেটর দুলাল সরকার। বুধবার TV9 বাংলার সামনে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন দুলাল সরকার। তিনি বলেন, “যাঁরা বোমা মেরে সন্ত্রাস চালিয়েছেন, তাঁরাই আজ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা, জেলা কমিটিতে রয়েছেন।” দুলাল সরকারের মন্তব্যে নতুন করে রাজনৈতিক চাপানোতর তৈরি হয়েছে মালদার তৃণমূলের অন্দরে।
এদিন তিনি জানান, বিভিন্ন জেলা নেতৃত্বকে দুর্নীতি নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন দলের সভানেত্রী এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বলা হয়েছিল কোনও জেলা বাদ দেওয়া হবে না। সে কারণে জেলা কমিটিগুলি চেঞ্জ হচ্ছে। নতুন করে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এটা লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত চলবে। পাশাপাশি দুলালবাবুর তোপ, “আমাকে সেভাবে জেলা কমিটিতে ডাকা হয় না। কারণ জেলা কমিটিতে এমন কিছু লোক রয়েছে, যাঁরা একসময় আমাদের বোম-গুলি মেরেছিল। তাঁরা এখন তৃণমূলের সামনের সারিতে বসে। তাঁরা এখন ভয়ে বা লোকলজ্জায় আমাদের পার্টির মিটিংয়ে ডাকে না।”
যদিও দলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সির বক্তব্য, “কারা কোথায় কী বলছে, আমার তো জানা নেই। তবে তৃণমূল কংগ্রেসে যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে মনোনীত করা হয় জেলা কমিটি, ব্লক কমিটি, অঞ্চল কমিটি, বুথ কমিটি, ওয়ার্ড কমিটি। আমরা সৎভাবে সংগঠন পরিচালনা করি। সাহসিকতার সঙ্গে আমি জেলা সভাপতি হিসেবে প্রস্তাবিত জেলা কমিটির নাম বিভিন্ন স্তরের ৩০০ জন কর্মীর সামনে রাখা হয়েছিল। আমরা মালদা জেলায় ইতিহাস তৈরি করেছি। বিগত দিনে ডানপন্থী রাজনীতিতে এটি দেখা যায়নি। আজ যদি কেউ এক লাইনও প্রশ্ন তোলেন, তাহলে ভাবতে হবে তিনি তৃণমূলের লোক নন।”
এদিকে এমন হাতেগরম ইস্যু পেয়ে লোপ্পা বলে ছক্কা হাঁকানোর সুযোগ ছাড়ছে না জেলার বিজেপি শিবিরও। জেলার বিজেপি নেতা বলেন, “মালদায় শুরু থেকে তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। মালদা জেলা নিয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী চিন্তিত। প্রতিবার এসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করার জন্য একাধিকবার শাসানি দিয়ে গিয়েছেন, কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। মানুষ বিজেপির সঙ্গে মালদা জেলায় আছে। মানুষ বুঝতে পারছে, প্রশাসন ছাড়া তৃণমূলের কোনও অস্তিত্ব নেই। সব জায়গায় বিজেপিতে ঢল নেমেছে। মানুষ বুঝতে পারছে, যদি কিছু বদল করা যায়, তা বিজেপিই করতে পারবে।”