মালদা: বিধানসভা নির্বাচন আবহেই রদবদল হয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলির। মালদা জেলা পরিষদ কার্যত দিখণ্ডিত হয়ে যায় দলবদল পর্বে। জেলা পরিষদের (Malda Zila Parishad) সভাধিপতি গৌড়চন্দ্র মণ্ডল নির্বাচনের আগে ১৫ জন সদস্যকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু, নির্বাচনে তৃণমূলের জয়লাভের পর বদলাতে শুরু করে ঘাস-পদ্মের অঙ্ক। গত ১৭জুন জেলা পরিষদের ২৩ জন তৃণমূল সদস্য বিজেপি সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করে। আগামী ৮ জুলাই আস্থা বৈঠকের দিন নির্দিষ্ট হওয়ার পরেই অনাস্থা চিঠির বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন গৌড়চন্দ্র। কিন্তু, হাইকোর্ট সেই মামলা খারিজ করে দেয়। হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরেই সভাধিপতির পদ থেকে গৌড়চন্দ্র মণ্ডলকে পদত্যাগের নির্দেশ দেয় রাজ্য বিজেপি।
সূত্রের খবর, ডিভিশনাল কমিশনারের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন গৌড়বাবু। যদিও ইস্তফা নিয়ে বিশেষ মুখ খুলতে চাননি বিজেপি নেতা। যেহেতু বিজেপির তরফে খোদ সভাধিপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তাই আর আস্থা বৈঠক হবে না বলেই জানা গিয়েছে। তবে, এরপর সভাধিপতি কে হবেন তা নিয়ে বৈঠক হতে পারে। পাশাপাশি, যদি অনাস্থা আনাও হয়, তাহলে তৃণমূলের হাতেই থাকবে জেলা পরিষদ এমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূলের মালদা জেলা চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, মালদা জেলা পরিষদের (Malda Zila Parishad) ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল, কিন্তু, জেলা সভাধিপতি বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় জেলা পরিষদ হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। ভোটে প্রার্থী হওয়ার পরেও দলবদল করেছিলেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সরলা মূর্মূ। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। কিন্তু, এ বারের নির্বাচনে মালদায় রীতিমতো সবুজ ঝড়। ১২টি আসনের মধ্যে ৮টি আসনেই জয়লাভ করে তৃণমূল। তারপরেই পুরনো দলে ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করেন সরলা। সেই মর্মে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দেন তিনি।
কার্যত, মালদা জেলা পরিষদ নিয়ে শাসক-বিরোধী চাপানউতোর দীর্ঘদিনের। বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, প্রায় ফসকে যাওয়া জেলা পরিষদ নিজেদের কুক্ষিগত করতেই অনাস্থার আইনি পন্থা গ্রহণ করে তৃণমূল। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি সভাধিপতির পদত্যাগের জেরে মালদায় ক্রমেই পোক্ত হচ্ছে পদ্মের আকাল। হারানো জেলা পরিষদ ফের তৃণমূলের হাতেই ফিরে আসছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন: ‘আইনি সমর’! হাওয়া বদলাচ্ছে মালদায়, জেলা সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনল তৃণমূল