দক্ষিণ মালদায় কালিয়াচক২, ৩ নম্বর ব্লকে এবং মানিকচকে গঙ্গা ভাঙনে সর্বস্ব খুইয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। অন্যদিকে আবার সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর মালদহের গঙ্গার সবচেয়ে বেশি ছোবল পড়েছে রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কান্তটোলা, শ্রীকান্তটোলা সহ ৬-৭টি গ্রামে৷
এই পঞ্চায়েতের জঞ্জালিটোলা, খাট্টিটোলা, খাকসাবোনা গ্রামগুলির মধ্যেই গঙ্গায় নিশ্চিহ্ন৷ ওই গ্রামগুলির অনেক মানুষ এখনও বাঁধে থাকেন৷ গত মরশুমে প্রশাসনের তরফে তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল বটে৷ কিন্তু তাও সাময়িক। পরে আর খোঁজ রাখেনি কেউ।
গত বর্ষায় ঘর হারিয়েছেন অর্চনা মণ্ডলও৷ তিনি বলেন, “নদীতে ঘর পড়ার পর অনেকে এসেছিল৷ সবার কত কথা! এই করে দেব, ওই করে দেব৷ ভরসা করেছিলাম ওদের৷ কিন্তু কেউ কিছু করেনি৷ একটা জায়গা পেলে মাথা গোঁজার বন্দোবস্ত করে নিতে পারতাম৷ কিন্তু এমএলএবাবু কাগজে সই করল না৷” তিনি আরও বলেন, “খগেন মুর্মু বলেছিল, ওরা জায়গা দিলে সে ঘর বানানোর জন্য কিছু পয়সা দেবে৷ জায়গা না হওয়ায় সেই পয়সাও পেলাম না৷ এ ওর কাঁধে দোষ দিচ্ছে৷ আর আমরা গঙ্গাপাড়ে জেগে রাত কাটাচ্ছি৷ জায়গা না পেলে এবার ভোটই দেব না৷”
এই গ্রামেরই বর্তমান প্রজন্ম আশিস মণ্ডলের বক্তব্য, “জন্ম থেকে গঙ্গার ভাঙন দেখছি৷ বাবারা তিনবার বাড়ি পাল্টেছে৷ আমি অনেক ভোট দেখেছি৷ ভাঙনকে ভোটের ইস্যু করে সব রাজনৈতিক দল৷ ভূরি ভূরি প্রতিশ্রুতি দেয়৷ সব ভাঁওতা৷ এবারও সব দলের আসা শুরু হয়েছে৷ ওরা তো গিরগিটির মতো রঙ বদলায়।” এবারও অবশ্য রাজনৈতিক দলের তরফে আশ্বাস মিলেছে। কিন্তু সে আশ্বাসে চিড়ে ভিজছে না।