মালদা: ‘দুয়ারে সরকারে’ অনবদ্য নজির তৈরি করল মালদা জেলা প্রশাসন। দৃষ্টিহীনদের ঘরে পৌঁছে গেলেন জেলা শাসক-সহ আধিকারিকরা। এক পরিবারের পাঁচ সদস্য, তাঁরা প্রত্যেকেই দৃষ্টিহীন। আর সেখানে কল্পতরুর মতোই একে একে খুলে দিলেন রাজ্যের সব প্রকল্পের দরজা। এমনকি এক অন্ধ পরিবারের ঘরে আলো জ্বালাতে নিজের পকেট থেকেই তিনি ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেন৷ মঙ্গলবার থেকেই শুরু করা হল তাঁদের প্রতিবন্ধী ভাতা। হচ্ছে পাকা বাড়ি। হবে পাকা শৌচালয়। তাঁদের চোখের চিকিৎসাও শুরু করা হল। পাশাপাশি তাঁদের সরকারি ঋণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে যাতে নতুন রোজগারের পথ তৈরি হয়। রতুয়া-২ ব্লকের সম্বলপুর পঞ্চায়েতের ইসলামপুর গ্রামের এই ঘটনায় আপ্লুত শাসক বিরোধী সকলেই।
ইসলামপুর গ্রামের বাবলু হক জন্ম থেকেই চোখে দেখতে পান না৷ শুধু তিনিই নন, তাঁর বোন ইসমেতারা খাতুন, দুই ছেলে ইমরান ও সোলেমান, এমনকি একমাত্র মেয়ে সাবিনা খাতুনও জন্মের পর থেকে অন্ধকার ছাড়া আর কিছু দেখেন না৷ চোখে দেখতে না পাওয়ায় তাঁরা কোনও কাজও করতে পারেন না৷ ভিক্ষাবৃত্তি করেই পেট চলে৷ বিষয়টি জানতে পেরেই ব্যবস্থা নেন জেলা শাসক৷ এদিন তিনি যান বাবলু হকের বাড়িতে৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক বৈভব চৌধুরী, বিডিও নিশীথ কুমার মাহাতো, জেলা পরিষদের সদস্য সেতারা খাতুন, পুখুরিয়া থানার ওসি গৌতম চৌধুরী প্রমুখ৷ তাঁরা এদিন বাবলু হকের বাড়ির সামনেই দুয়ারে সরকারের মোবাইল ক্যাম্প করেন৷ গ্রামবাসীদের মুখ থেকে বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন৷ সেখানে বসেই অনেক সমস্যা সমাধানের পথ করে দেন জেলার প্রশাসনিক প্রধান৷
বাবলুর বক্তব্য, “আমার বাড়ির সবাই অন্ধ। চোখে দেখতে পারি না। গ্রাম ঘুরে ভিক্ষা করি। আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। শুধু এই বাড়িটাই আছে। সরকারের সাহায্যে সত্যিই উপকৃত হলাম।”
জেলাশাসক বলেন, “যেহেতু ওঁরা আসতে পারছেন না, তাই আমরাই গিয়েছিলাম। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড করে দেওয়া হয়েছে, মানবিক পেনশন আজ থেকেই চালু হয়েছে। আলু কাটা গিয়েছিল, বিল দিতে পারেননি বলে, আমরা বিদ্যুৎ এনে দিয়েছি। চোখেরও চিকিৎসা করানো হবে সরকারি প্রকল্পের আওতায়।”