কোচবিহার: চিত্রগুপ্তের খাতা, সেখানে যেমন সবার পাপ-পুণ্য়ের হিসাব থাকে। তেমন একটি মামলা কোন পথে এগোচ্ছে? আগের তদন্তকারী কী কাজ করেছিলেন? এখনকার তদন্তকারী অফিসারই বা কী করছেন? এই সব কিছুই নথিভুক্ত একটি মামলার কেস ডায়রিতে। কিন্তু তদন্তের মাঝে যদি সেই কেস ডায়রিই ‘গায়েব’ হয়ে যায়, তখন কী হবে?
এই রকম কাণ্ড ঘিরে কোচবিহারে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। ২০১৩ সালের একটি মাদক মামলা। তার কেস ডায়রি নিয়ে হিমশিম খেয়েছে জেলার প্রশাসনিক বিভাগ। কিন্তু কিছুতেই হদিশ মিলছে না সেটির। এদিকে নিজের গতিতেই চলেছে বিচারপ্রক্রিয়া। ইতিমধ্যে জামিন পেয়ে গিয়েছেন অভিযুক্তরা।
দু’বছর আগে এই মাদক মামলায় অভিযুক্তের আগাম জামিনের আর্জির শুনানি চলাকালীন সেই ‘হারিয়ে যাওয়া’ কেস ডায়রি নিয়ে প্রশ্ন তোলে কলকাতা হাইকোর্ট। পুলিশের দাবি, ২০১৩ সালে থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পলাতক ছিল অভিযুক্তরা। সেই সময়কালে কেস ডায়রিই ছাড়াই কিছু ভিন্ন ভিন্ন জেরক্স, তথ্য দিয়ে চলেছিল মামলা। পরবর্তীতে আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিনের মামলা করে অভিযুক্তরা। তখনই ওঠে কেস ডায়রির প্রসঙ্গ। ‘পাত্তা না পাওয়ায়’ ডায়রি খুঁজতে একটি সিট গঠন করা হয় আদালতের তৎপরতায়। কিন্তু সেই সিটের রিপোর্টে আদালত সন্তুষ্ট না হওয়ায় দায়িত্ব যায় সিবিআইয়ের কাঁধে। সেই পদক্ষেপের পরেও যে বিশেষ গতি পেয়েছে কেস ডায়রি নিখোঁজ মামলা এমনটা নয়। ‘মামলার খাতা’ নিয়ে এখনও অন্ধকারেই রয়েছে সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা।
উল্লেখ্য, কেস ডায়রির নিয়ে আদালতের নির্দেশের পর তোর্সা হয়ে বয়ে গিয়েছে কত না জল। আত্মসমর্পণ করে জেল খেটে এখন জামিনে রয়েছে সেই মাদক মামলার অভিযুক্তরা। কিন্তু তাও হদিশ মেলেনি কেস ডায়রি। সম্প্রতি, সেই ডায়রির খোঁজেই কোচবিহারে যায় সিবিআই তদন্তকারীরা। সেখানকার বর্তমান ও প্রাক্তন পাবলিক প্রসিকিউটরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে তারা। কিন্তু বর্তমান পিপি-র দাবি, প্রাক্তন পিপি তাকে সেই কেস ডায়রি দিয়ে যায়নি। আবার প্রাক্তনের দাবি, কেস ডায়রি চলে গিয়েছে এক ASI-এর সঙ্গে। এই ঘটনায় NDPS পিপি নকুল চন্দ্র দে জানাচ্ছেন, ‘এক অভিযুক্ত ক্যানসার রোগী, তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন। কেস ডায়রি ছাড়াই এতদিন ধরে চলেছে বিচারপর্ব। এখন সিবিআই তদন্ত চালিয়ে সেই কেস ডায়রির সন্ধানে নেমেছে।’