মুর্শিদাবাদ : কোনও রাজ্যের উপ নির্বাচনে সাধারণত জয় আসে শাসক দলের ঘরেই। এ রাজ্যে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে একের পর এক ভোটে অনায়াস জয় পেয়েছে তৃণমূল (TMC)। তবে বৃহস্পতিবার সাগরদিঘি উপ নির্বাচনের (Sagardighi By Election) গণনার দিন সকাল থেকেই চাপ বাড়তে শুরু করে তৃণমূলের। মুর্শিদাবাদের এই বিধানসভা আসনে কার্যত উলট পুরাণ! একের পর এক রাউন্ডে এগিয়ে গিয়েছেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ১২ রাউন্ড গণনা শেষে ২১ হাজার ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন জোটের প্রার্থী। আর সেই ফলাফল সামনে আসতেই আত্মবিশ্বাস বেড়েছে কংগ্রেসের। সেই সুর শোনা গেল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর গলাতেও। মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের পুরনো দাপট ফিরে আসার কথাও বলছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
ভোটের আগে বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছিল প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসকে। তবে ভোটবাক্সে তার কোনও প্রভাব পড়েনি বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিন অধীর চৌধুরী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, এই ফলাফল স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে, তৃণমূল আর তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা কোনও অপারেজয় শক্তি নয়। সাহসিকতা, সততার সঙ্গে সাগরদিঘির মানুষ প্রমাণ করেছে, মমতাকে পরাজিত করা যায় যায় যায়। সাগরদিঘির মাটিতে নতুন ইতিহাস তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন অধীর। তাঁর কথায়, সাগরদিঘিতে যে তুফান উঠেছে, তা আগামিদিনে ঘুর্ণীঝড়ে পরিণত হবে ও শাসক দলকে সরাতে সক্ষম হবে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সাগরদিঘির এই নির্বাচনে নজর রয়েছে সব মহলের। কংগ্রেস প্রার্থীর জয়ের থেকেও এই ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে জোটের ভবিষ্যৎ। বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীর সাফল্যের কথা মাথায় রেখেই আগামিদিনে রাজনৈতিক সমীকরণ নির্ধারিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেস শিবিরের দাবি, শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ প্রভাব ফেলেছে ভোটবাক্সে।
গণনার শুরু থেকেই সাগরদিঘিতে তৃতীয় স্থানেই রয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিজেপির ঘরে যে ভোট শতাংশ এসেছে, সংগঠনের নিরিখে তা আশানুরূপ।’ তাঁর দাবি, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চলে বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিজেপির প্রার্থীরা ঢুকতে পারেনি। কিন্তু এবার সেই বুথে পোলিং এজেন্ট দিতে পেরেছি।