Bayron Biswas: ‘ওঁ এত নোংরা লোক…’, IT হানার মাঝেই বায়রনের চরিত্রের আরেক দিক প্রকাশ্যে
Bayron Biswas: কটূক্তি থেকে বিদ্রুপ করতে ছাড়লেন না সাগরদিঘির জনগণ। বুধবার তাঁর বাড়িতে আয়কর দফতরের হানা এবং সেখান থেকে টাকা উদ্ধার হয়। আয়কর দফতরের আধিকারিকরা মুর্শিদাবাদে বায়রন বিশ্বাসের সম্পত্তির মোট সাতটি জায়গায় হানা দিয়েছেন।
মুর্শিদাবাদ: মুখে অম্লান একটা হাসি। একটা নিপাট চেহারা। মূলত ব্যবসায়ী পরিবারেই ছেলে। বিড়ি ব্যবসায়ী হিসাবেই রাজনীতিকদের সঙ্গে তাঁর ওঠাবসা শুরু। সমাজসেবী হিসাবেই নাম ছিল তাঁর। আর জীবনের প্রথম সবচেয়ে বড় পরীক্ষাতেই সফল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কথায়, কাজ করে গিয়েছিল, বায়রনের ‘সাদামাটা চেহারার ম্যাজিক’। সাগরদিঘির উপনির্বাচনে শাসকদলের প্রার্থীকে পরাজিত করে রাতারাতি তিনি ছিলেন রাজ্য রাজনীতির লাইমলাইটে। তারপর রাজনীতির নদীতে অবশ্য অনেক জল বয়ে গিয়েছে। এখন বায়রনের দুয়ারে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। আর এই আয়কর হানা হতেই প্রকাশ্যেই বায়রনের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন সাগরদিঘির বাসিন্দারা। কেউ বলছেন ‘লোকটা এত নোংরা জানতাম না’ , কেউ বলছেন, ‘ওকে খারাপ কিছু বলা যাবে না, আমরা তো আসলে ভদ্র মানুষ।’ আবার কেউ বলছেন, ‘এমএলএর নাম করলে নাপাক হয়ে যাবে’। বায়রন বিশ্বাসকে নিয়ে প্রকাশ্যেই কটূক্তি করছেন সাগরদিঘির জনগণ।
কটূক্তি থেকে বিদ্রুপ করতে ছাড়লেন না সাগরদিঘির জনগণ। বুধবার তাঁর বাড়িতে আয়কর দফতরের হানা এবং সেখান থেকে টাকা উদ্ধার হয়। আয়কর দফতরের আধিকারিকরা মুর্শিদাবাদে বায়রন বিশ্বাসের সম্পত্তির মোট সাতটি জায়গায় হানা দিয়েছেন। রঘুনাথগঞ্জ অবস্থিত তাঁর স্কুল সুতিতে বারুদ নির্মীয়মান কেমিক্যাল হাব ধুলিয়ানের ডাকবাংলার বাড়িতে চা কারখানা হাসপাতাল ও ধুলিয়ান পৌরসভা এলাকার বাড়িতেও হানা দেয় একবার দফতরের আধিকারিকরা।
সাত সকাল থেকে মাঝ রাত পর্যন্ত চলে তল্লাশি। বাজেয়াপ্ত হয় বেশ কয়েকটি হার্ড ডিস্ক ও ল্যাপটপ। উদ্ধার হয় ৭১ লক্ষ টাকা এবং নথি নিয়ে যান আধিকারিকরা।
সাগরদিঘি তৃণমূল বিধায়ক সুব্রত সাহার মৃত্যুর পর উপনির্বাচন হয় সাগরদিঘি কেন্দ্রে। সেই উপনির্বাচনের বাম কংগ্রেসের প্রার্থী হয় বায়রন বিশ্বাস। জয় লাভ করেন। তবে সাগরদিঘিতে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে শাসকদলের বিরুদ্ধে লড়াইটা নেহাতই সহজ ছিল না বায়রনের কাছে। কংগ্রেসের টিকিটের জেতার কয়েক মাসের মধ্যে দল বদল করে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘নবজোয়ার কর্মসূচি’তে গিয়ে তৃণমূলে যোগদান করেন। এরপর থেকেই তাঁকে নিয়ে সাগরদিঘির একটা অংশ মানুষ বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন সময় কটাক্ষ করে থাকেন। আর এই আয়কর হানার পর বায়রনকে নিয়ে বিদ্রুপ সাগরদিঘির মানুষের। বায়রনের বাড়ির সামনে দিয়েই এদিন যাচ্ছিলেন মহম্মদ শেখ। তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই কিছু একটা করেছেন। তাই তল্লাশি চলছে। তা না হলে আমাদের বাড়িতেও তো আসতে পারত।”
প্রায় আশির কোঠায় এক বৃদ্ধ। চায়ের দোকানে বসেছিলেন। তিনি বলেন, “আমাদের বিধায়কের নাম মুখে নেওয়া যাবে না। ওঁর নাম করলেই দেহ নাপাক হয়ে যাবে।” পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন মাঝবয়সী আরেক ব্যক্তি। তিনি বললেন, “এখানকার মানুষ ওকে প্রাণভরে ভোট দিয়েছিল। বড়লোকের ছেলে। ভেবেছিলাম এলাকার উন্নয়ন করবে। দল বদল তো করলই। ওর এত নোংরামি সামনে এল। এত নোংরা লোক আমরা বুঝতে পারিনি আগে। আমাদের সবাইকে ঠকিয়েছে।” আরেক মহিলা বললেন, “আমরা সন্তুষ্ট নই ওর আচরণে। আমরা ভদ্র মানুষ। ওর ব্যাপারে এর থেকে বেশি কিছু বলা যাবে না।” বায়রনকে নিয়ে এখন ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দারা। ক্যামেরা দেখতেই ক্ষোভ উগরে দিলেন।