বহরমপুর: রাজ্যে করোনার বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ চালু করা হয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই কড়াকড়ি সিদ্ধান্তের পরেও তাঁকে বক্রোক্তি করতে ছাড়ছেন না বিজেপি নেতারা। বিশেষ করে, কেন এই পরিস্থিতির মধ্যেও বড়দিন কিংবা বর্ষবরণে কোভিড কড়াকড়িতে ছাড় দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন পদ্ম নেতারা। সেই প্রসঙ্গ টেনেই মঙ্গলবার ফের একবার মমতাকে বিঁধলেন অর্জুন সিং। বললেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হিসেবে কোভিড চলে।”
মঙ্গলবার বহরমপুরে বিজেপির দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার কার্যালয়ে অর্জুন সিং বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি গাইডলাইন মানেন না। গতকাল ভাইপোর এমপি কাপ চলছিল। সেখানেও মাস্ক ছিল না। তাঁর জন্য কোনও কোভিড প্রোটোকল নেই। সাধারণ মানুষ রাস্তায় চলাচলের সময় মাস্ক না পরলে, পুলিশ গ্রেফতার করবে।” উল্লেখ্য, সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরা গিয়েছিলেন। সেখানে অভিষেকের কর্মসূচিতে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না বলে অভিযোগ তুলেছেন অর্জুন সিং।
সদ্য সমাপ্ত কলকাতা পুরনিগম নির্বাচনে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি। কিন্তু আসন্ন পুরভোটে পরিস্থিতি একেবারেই তেমন হবে না বলে আত্মবিশ্বাসী অর্জুন সিং। তাঁর কথায়, “কলকাতাকে সামনে রেখে যদি (তৃণমূল) ভাবে একতরফা গোল মারবে, তাহলে ভুল করবে। মফস্বলে লড়াই কঠিন আছে। পুলিশ ও তৃণমূলের গুন্ডা থাকবে ঠিকই, কিন্তু আমরাও প্রস্তুত আছি।” এই কথা অবশ্য কলকাতার পুরনিগম নির্বাচনে হারের পরও বলতে শোনা গিয়েছিল বঙ্গ বিজেপিকে। পদ্ম শিবির স্বীকার করে নিয়েছিল, কলকাতায় তৃণমূল শক্তিশালী, জেলায় বিজেপি। মঙ্গলবার সেই কথাই আবারও শোনা গেল অর্জুন সিংয়ের গলায়।
বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর সোমবার রাতে দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন। তাঁর রাজনৈতিক গতিবিধি নিয়ে জোর চর্চা চলছে বঙ্গ রাজনীতির অন্দরমহলে। তবে মোদীর মন্ত্রিসভার সদস্যর গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে অর্জুন সিং বলেন, “শান্তনু ঠাকুর আমাদের মন্ত্রী। উনি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে সরে যাচ্ছেন। কেন সরে যাচ্ছেন সেটা উনার ব্যাপার। কোনও ব্যক্তির জন্য বিজেপি নয়। বিজেপিতে কোনও একজন ব্যক্তি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে চলে গেল তাতে বিজেপিতে কোন যায় আসে না। ভুল ভ্রান্তি হতেই পারে। মিডিয়াতে যাওয়া উচিত নয়।”
সোমবার রাতে জানা যায়, বিজেপির বেশ কিছু হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। রাজ্য নেতাদের হোয়াটসঅ্য়াপ গ্রুপ, বাংলার বিজেপি সাংসদদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ সহ বেশ কিছু গ্রুপ থেকে তিনি বেরিয়ে গিয়েছেন। মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, যেভাবে পশ্চিমবঙ্গে জেলা কমিটি তৈরি করা হয়েছে তাতে তিনি মোটেই সন্তুষ্ট নন। তিনি একজন কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী, তিনি মতুয়া সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রতিনিধ। অথচ তাঁর সঙ্গে কোনও কথা বলা হয়নি এই কমিটি গঠনের সময়। জেলা সভাপতির পদে তো নয়ই, এ ছাড়াও কমিটির বিভিন্ন পদে যে মতুয়া প্রতিনিধিত্ব রাখার কথা ছিল, তা রাখা হয়নি। একইসঙ্গে রাজ্য কমিটিতেও মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখা হয়নি বলেই মত শান্তনু ঠাকুরের।
আরও পড়ুন : Post Poll Violence: ‘২১টি ধর্ষণের অভিযোগের কোনও প্রমাণ নেই’, এই তথ্য সঠিক নয়, বলল সিবিআই