মুর্শিদাবাদ: মনে ইচ্ছা থাকলে নাকি কোনও বাধাই বাধা নয়। তবে শরীরের কয়েকটা অঙ্গ যদি কাজ না করে, তাহলে কি সত্যিই স্বপ্নের পিছনে দৌড়নো সম্ভব? মুর্শিদাবাদের মহম্মদ আলম রহমান প্রমাণ করল, ইচ্ছা থাকলেই সত্যিই সব সম্ভব। স্নান করা বা খাওয়া তো দূরে থাক, ব্য়াগ থেকে বই বের করতেও যার অন্যদের সাহায্য থাকে, সেই ছাত্রই পেয়েছে ৯০ শতাংশ নম্বর।
মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার বৈদ্যনাথপুরের বাসিন্দা মহম্মদ আলম রহমান। মাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর ৬২৫। শতাংশের হিসেবে ৯০ শতাংশ। গড্ডা গণপতি আদর্শ বিদ্যাপীঠের ওই ছাত্র জন্মের পর স্নায়ু রোগে আক্রান্ত হওয়ায় দুই হাত অকেজো হয়ে যায়। দুই পা-তেও কোনও জোর নেই। তবুও মনের জোর আর অদম্য প্রচেষ্টায় তার এই ফলাফল বলে জানিয়েছেন মহম্মদ আলম রহমানের পরিবার পরিজনেরা।
শুক্রবার দুপুরে ফল প্রকাশের পর থেকেই এই ছাত্রের বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ। তার সঙ্গে কথা বলতে এসেছেন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব ও প্রশাসনের আধিকারিকেরাও। মহম্মদ আলম রহমানের ইচ্ছে বিজ্ঞান নিয়ো পড়াশোনা করার। উচ্চ শিক্ষার পর মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে স্পেস সায়েন্টিস্ট হতে চায় সে। তবে প্রতিবন্ধকতা আর পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি বাধা হবে না তো! এটাই আশঙ্কা বাবা-মায়ের। পেশায় গ্রামের মুদি ব্যাবসায়ী আলম রহমানের বাবা ফিরোজ মহম্মদ জানান ছেলের পড়াশোনার জন্য যা যা প্রয়োজন সবই করেছেন তিনি। সাইকেলে চাপিয়ে স্কুলে নিয়ে যেতেন আবার নিয়ে আসতেন ছেলেকে। আজ এই ফলাফলে আবেগ ধরে রাখতে পারছেন না তিনি। আর মা আলম আরা বিবির মনে আনন্দের সঙ্গে উঁকি মারছে ভয়। যে ছেলেকে সব করিয়ে দিতে হয়, তাকে কী ভাবে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াবেন বুঝতে পারছেন না। পরিবারের পাঁচ সদস্যের পেট চালিয়ে আলমকে কতদূর নিয়ে যেতে পারবেন, তা ভাবাচ্ছে পরিবারকে।