মুর্শিদাবাদ: কংগ্রেসের (Congress) হয়ে ভোটে লড়তে দোনামনা তাঁর ছিলই। তবে শেষ পর্যন্ত ‘মানুষের স্বার্থে’ তিনি ভোটে লড়বেন বলে জানান সামসেরগঞ্জের (Samserganj) কংগ্রেস প্রার্থী জইদুর রহমান (Jahidur Rahman)। আবার ভোটের দিনই ‘মানুষের স্বার্থে’ তিনি তৃণমূলে (TMC) যেতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দিলেন! বললেন, তিনি কোনও দলের নন, মানুষের স্বার্থে ভোটে লড়ছেন। তাই মানুষের প্রয়োজনে তৃণমূলে যেতে হলে যাবেন।
মানুষের স্বার্থে জেতার পরে তৃণমূলে যেতে পারেন বলে বৃহস্পতিবার ভোটের দিনই আগাম জানিয়ে রাখলেন সামসেরগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী জইদুর রহমান। উল্লেখ্য, তাঁর পরিবার বিশেষ করে দাদা খলিলুর রহমান তৃণমূলের জেলা সভাপতি এবং জঙ্গিপুর লোকসভার সাংসদ। আর সেই কারণেই প্রথম দিকে প্রার্থী হয়েও প্রচারে নামেননি তিনি। পরে সিদ্ধান্ত বদল করেন। মাত্র সাতদিনের প্রচারের পর নিজের জয় সম্পর্কে তিনি একপ্রকার নিশ্চিত দাবি করেছেন। তাঁর এহেন আচরণে ক্ষুব্ধ স্বয়ং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
যদিও জইদুর সে সবের পরোয়া করছেন না। ভোটের দিনই তিনিবললেন, ভাইয়ের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক। রাজনীতি অন্য জায়গায়। তবে এলাকার মানুষের স্বার্থে তিনি তৃণমূলেও যেতে রাজি। কারণ, তাঁর লড়াই বিশেষ কোনও দলের হয়ে বা বিরুদ্ধে নয়। কাটমানি আর তোলাবাজদের বিরুদ্ধে। মূলত নাম না করে তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলামকে তোলাবাজ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। আবার নিজেও তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন।
এটাই অবশ্য প্রথম নয়। তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমানের ভাই কংগ্রেস প্রার্থী জইদুর রহমান এর আগে প্রচার মঞ্চেও নিজের দলকেই নিশানা করেছিলেন। সামসেরগঞ্জের ৭০টি বুথ দখল করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে গত শুক্রবার সভায় অভিযোগ তোলে কংগ্রেস প্রার্থী জইদুর। বলেছিলেন, “ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতীদের আনা হয়েছে বুথ দখলের জন্য। ৭০টি বুথ দখল করে যাঁরা মানুষের ভোট লুঠ করতে চায় তাঁদের রুখুন। নির্বাচন কমিশনের লোক সভায় আছেন। তাঁরা ব্যবস্থা নিন।” আর বৃহস্পতিবার ভোটের দিন জানিয়ে দিলেন জেতার পর তিনি কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যেতেও পিছপা হবেন না।
জইদুরের অভিযোগ, গঙ্গা ভাঙনে বিধ্বস্ত সামসেরগঞ্জের মানুষ। রাজনৈতিক দলগুলি দলাদলিতে গিয়ে কাজ করছে না মানুষের। তিনি প্রয়োজনে কেন্দ্রের কাছে এ নিয়ে দরবার করবেন। আর কংগ্রেসের টিকিটে জিতলেও মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে যদি শাসক শিবিরে যোগ দিতে হয়, তাই-ই করবেন।
উল্লেখ্য, সামসেরগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী রেজাউল হক ওরফে মন্টু বিশ্বাসের মৃত্যুতে ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ পিছিয়ে যায়। ভোটের দিন ঠিক হয়েছিল ১৪ মে। সেই ভোটের জন্য গত ২৬ এপ্রিল মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন জইদুর রহমান। প্রচারও শুরু করেছিলেন। কিন্তু ইদের কারণে সেই ভোটও পিছিয়ে যায়। অবশেষে ঠিক ৩০ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার সেই ভোটগ্রহণ পর্ব চলছে। আর এদিনই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে আলোড়ন ফেলে দিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: Samserganj Jangipur By-Election: ‘মাস্ক নিন, ভোট দিন,’ কংগ্রেস নেতাকে সরাতে গিয়ে কাঁচুমাচু পুলিশ!