নওদা: কোথাও দাউদাউ করে জ্বলেছে জনমত, কোথাও পুকুরে ভেসেছে ব্যালট বক্স। পঞ্চায়েত ভোটের দিন গোটা বাংলাতেই কার্যত বয়েছে রক্ত গঙ্গা। পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election 2023) মিটতেই এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে খড়গহস্ত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Choudhury)। সাফ বললেন, “এসব করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী একটা দুটো বুথ আপনি দখল করতে পারেন। কিন্তু, বাংলার মানুষের মন দখল করতে পারবেন না। শাস্তি আপনাকে আজ না হয় কাল পেতেই হবে।” অসমর্থিত সূত্রে খবর, ভোটের দিন বাংলায় মৃত্যু বয়েছে ১৯ জনের। তার মধ্যে শুধু মুর্শিদাবাদেই মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। খড়গ্রাম থেকে রেজিনগর, লালগোলা থেকে বেলডাঙা, নওদায়, দিকে দিকে ঝরেছে রক্ত।
ভোট মিটতেই এবার স্বজনহারাদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন অধীর। নওদায় বোমাবাজির ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে হাজি লিয়াকৎ আলি শেখের (৬২)। অভিযোগের তির তৃণমূলের (Trinamool Congress) দিকে। এদিন সকালে তাঁর বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ফের একবার তৃণমূল সরকারকে কাঠগড়ায় তুলতে দেখা গেল অধীরকে। চাঁচাছোলা ভাষায় তোপ দাগতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে।
অধীরের দাবি, “যাঁকে হত্যা করা হয়েছে সে নির্দোষ। তা সবাই জানে। ও সজ্জন, ইমানদার, ধর্মপ্রাণ মুসলমান। ও কোনও ঝামেলায় থাকত না। দিনে পাঁচ বার নামাজ পড়ত। কারও সাতে পাঁচে থাকতো না।” এরপরই মমতার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এত মানুষ খুন করে আপনি কী মহান হবেন? এই মানুষগুলোকে খুন না করলে কী আপনার মুখ্যমন্ত্রীত্বের পদ চলে যেত? একটা পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২-৪টি সিট আপনি হারলেও আপনার তো মুখ্যমন্ত্রীর গদি টলে যেত না। কিন্তু, আপনি এ কী কাজ করছেন? আর কত মানুষ মারবেন? নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরেও এখনও হিংসা অব্যাহত এই বাংলায়।”
প্রসঙ্গত, ১১ জুলাই ভোটের ফলপ্রকাশের কথা রয়েছে। সেদিনও বেনজির হিংসার সাক্ষী চলেছে বাংলা। এমনটাই আশঙ্কা করছেন অধীর। এদিন নওদা থেকে তিনি বলেন, “পরশু কাউন্টিং আছে। ওইদিনও আর একটা সন্ত্রাস কবিলিত বাংলা আমরা দেখতে পাব। জয়-পরাজয় মিলিয়ে এ বাংলায় আর একটা ভয়াবহ দিনের সৃষ্টি হবে। ইলেকশন কমিশনকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। দিদিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। ১১ তারিখে তাঁর পা ভাল হয়ে যাবে। এ নাটক আমরা জানি। এ নাটক আমরা বুঝি। কিন্তু, এই করতে করতে বাংলা রসাতলে যাচ্ছে। বাংলার মানুষ মুর্শিদাবাদে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেছে, মালদায় প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেছে।”
তাঁর দাবি, এই প্রতিবাদ দিতে দিকে ধ্বনিত হবে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সকলেই রুখে দাঁড়াবে। অন্যদিকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য এদিন পুলিশকেও এক হাত নেন অধীর। রীতিমতো কটাক্ষের সুরে বলেন, “এখন তৃণমূল আর পুলিশের মধ্যে কোনও তফাৎ খুঁজে পাচ্ছি না। যেখানে তৃণমূল পারছে না, সেখানে পুলিশ যাচ্ছে। কংগ্রেস বসে থাকবে না। এই হত্যার প্রতিবাদে, রাস্তায় আন্দোলন, কোর্টে আন্দোলন, সব আমরা করব।”