মুর্শিদাবাদ: ‘ইকো’ করার জন্য ঢোকানো হয়েছিল। সেখানেই ঘটে যায় কিছু। যখন ঘর থেকে রোগীকে বার করা হয়, তখন তাঁর শরীরে সার নেই। তারপর ওই অবস্থাতেই ব্যক্তিকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফেলে রেখে আসা হয় বলে অভিযোগ। ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম প্রণব কুমার মণ্ডল (৪৫)। মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃতদেহ ফেলে দিয়ে আসার অভিযোগ উঠেছে বহরমপুরের একটি ডায়াগনেস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে।
জানা গিয়েছে, প্রণবের বাড়ি বড়ঞা থানার নবদূগা গ্ৰামে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বিকালে বাইক চালিয়ে বহরমপুরে একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা করান। তারপর ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ‘ইকো’ করার জন্য যান। অভিযোগ, ইকো করার সময় ঘরে ঢুকিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় বের করে আনা হয়। ওখানেই মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
এরপর হাসপাতালে ‘আনক্লেমড বডি’ বলে ফেলে দিয়ে আসার অভিযোগ তোলে পরিবার। পরিবারের অভিযোগ, রবিবার ওই ডায়গনস্টিক সেন্টারে প্রথম অস্বীকার করে। এরপর পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ গিয়ে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। তবে রবিবার থেকে এখনও পর্যন্ত ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তরফ থেকে প্রেসক্রিপশন বা টেস্টের কোনও বিলের রিসিভড কপি দেওয়া হয়নি।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ” ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন, পাশেই বসেন তিনি। ড. কপিল মণ্ডলকে দেখাতে আসেন। ইকো করতে পাঠিয়েছিলেন। এখানে যে আমার জামাইবাবু এসেছেন, সেটা তো ওরা প্রথমে স্বীকারই করেননি। ওরা আমাদের মানি রিসিভিড কপি, প্রেসক্রিপশন কিছুই দেয়নি। পরে থানায় গিয়ে অভিযোগ করি। তারপর পুলিশ গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে। তখন দেখা যাচ্ছে, চারটের সময়ে গিয়েছিলেন, বাইক স্ট্যান্ডও করেন।” সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সবার সঙ্গে কথা বলছিলেন, এক ঘণ্টা বসেছিলেন। তারপর ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, আচমকাই ছোটাছুটি পড়ে যায় ক্লিনিকে। তারপর রুম করে বার করে আনা হয় প্রণবকে। পরিবারের অভিযোগ, তখনই মৃত্যু হয়ে গিয়েছে। ওই অবস্থাতে কোনও অ্যাম্বুলেন্স না ডেকে কেবল একটা টোটোতেই নিয়ে গিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফেলে রেখে আসে।
সকালে মৃতের পরিবারের সদস্যরা ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিক্ষোভ দেখান। বহরমপুর থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই পক্ষকেই থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক কর্মী বলেন, “হাসপাতালে বাড়ির লোক আসা পর্যন্ত আমাদের লোক সেখানে ছিল। আমাদের কাছে ওঁর পরিবারের নম্বর ছিল না। তাই প্রথমেই যোগাযোগ করতে পারিনি।”