বহরমপুর : প্রথমে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও পরে অনুব্রত মণ্ডল, সম্প্রতি দুই নেতাকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরই মধ্যে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্যে বাড়ল বিতর্ক। মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে এক জনসভায় তিনি দাবি করলেন, ফিরহাদ হাকিমকেও এবার ‘ভিতরে’ পাঠানো হবে। তাঁর বক্তব্যের ইঙ্গিত, রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে। সুকান্ত মজুমদার এ কথা বলার পরই কড়া প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফে। সিবিআই বা ইডি-কে আদতে বিজেপিই চালাচ্ছে বলে ফের একবার সরব হয়েছে ঘাসফুল শিবির।
বৃহস্পতিবার বহরমপুরে একটি প্রতিবাদ সভায় যোগ দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর বক্তব্য তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতারির প্রসঙ্গ উত্থাপন করে তিনি বলেন, ‘পার্থ বাবু আর অনুব্রত মণ্ডল প্রতিযোগিতা করছেন। বারবার তাঁরা ডাক্তারখানায় যাচ্ছেন। তাই এবার হেকিমকে ভিতরে ঢোকাতে হবে।’ এরপরই তিনি উপস্থিত দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, তৃণমূলে একজন হাকিম আছে জানেন তো? সমর্থকদের মধ্যে থেকে উত্তর আসে ‘ফিরহাদ হাকিম’। এরপরই ফের সুকান্ত বলেন, ‘তাঁকেও প্রস্তুত হতে বলুন। তাঁকেও আমরা ভিতরে ঢোকানোর ব্যবস্থা করব। কাউকে আর হাসপাতালে যেতে হবে না। ভিতরেই হাকিম সাহেব চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেবেন।’
ভরা জনসভায় সুকান্তর এমন মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘এই কথা থেকেই পরিষ্কার, ইডি ও সিবিআই-কে নিয়ন্ত্রণ করছে দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতর। তাই এখানে সুকান্ত এ কথা বলতে পারছেন।’ তাঁর প্রশ্ন, স্বাধীন ভারতে আইনের শাসন রয়েছে, তারপরও কী ভাবে গর্বের সঙ্গে এ কথা বলছেন সুকান্ত? উনি কি মালিক নাকি? দেশে গণতন্ত্র নেই, আইনের শাসন নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাজ্যে দুই বড় কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোর পর গ্রেফতার হয়েছে পার্থ ও অনুব্রত। নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও গরু পাচার মামলায় আসানসোল জেলে রয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এরপরই শাসক দলের সঙ্গে দুর্নীতি যোগ নিয়ে নতুন করে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। কয়েকদিন আগেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দাবি করেন, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের সেখানেই পাঠানো হবে, যেখানে তাঁরা থাকলে দেশের আইনের সম্মান থাকবে। যদিও কোনও নেতার নাম নেননি তিনি।