মুর্শিদাবাদ: পাঁচ রাজ্যের বিধানসভার ফলপ্রকাশ হল বৃহস্পতিবার। প্রতিটি রাজ্যেই কংগ্রেসের ফল যথেষ্ট আলোচনার অবকাশ রাখে। যে পঞ্জাবে (১১৭টি আসন বিধানসভায়) কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল, সেখানে সাকুল্যে ১৮টি আসনে জিততে পেরেছে। উত্তর প্রদেশে (৪০৩টি বিধানসভা আসন) ২টিতে জিতেছে কংগ্রেস। ৭০ আসনের উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় কংগ্রেসের প্রতিনিধি থাকছেন ১৯জন। মণিপুরে ৬০টি আসনে কংগ্রেস পেয়েছে ৫টি। গোয়ার ৪০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ১২টি। আর এই ফল প্রকাশের পরই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর গলায় শোনা গেল অন্য সুর। অধীরের দাবি, বিজেপিকে এককভাবে হারানো যে সহজ নয়, সে ইঙ্গিতই প্রচ্ছন্ন এদিনের রিপোর্টকার্ডে।
অধীর চৌধুরী বলেন, “এই ফলাফল স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে বিজেপিকে এককভাবে হারানো অত্যন্ত কঠিন কাজ। আরও একটা স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে ভারতবর্ষের রাজনীতিতে আপ নামক আরেকটি রাজনৈতিক দলের উত্থান হচ্ছে। যে জায়গাটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় রাজনীতিতে নিতে চেয়েছিলেন, সেই জায়গাটা অরবিন্দ কেজরীবাল নিয়ে নিচ্ছেন।” অন্যদিকে গোয়ায় কংগ্রেসের ফলের কারণ হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তোলেন অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, “তৃণমূল ও অন্যান্য স্থানীয় দল গিয়ে যেভাবে কংগ্রেসের ক্ষতি করেছে তার জন্য বিজেপির পক্ষে অনেকটা সহযোগিতা হয়েছে।”
যদিও অধীরের এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। কুণাল ঘোষ বলেন, “কংগ্রেস সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। যে কংগ্রেস কর্মীদের সিপিএম খুন করেছে। অধীর ঈর্ষার থেকে এই কথা বলছে। বিজেপির সঙ্গে সিপিএম ও কংগ্রেস বি টিম হয়ে তৃণমূলকে হারানোর চেষ্টা করেছে।” কুণাল ঘোষের সংযোজন, “কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা এবং কর্মীদের উচিত এরকম একটা দল থেকে বেরিয়ে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জোট তৈরি করা। অধীর চৌধুরীর উচিত কংগ্রেসের এই অবস্থার পরেও আয়নায় মুখ দেখা।”
উত্তর প্রদেশে বিজেপির জয় প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেন, “সরকারের প্রকল্পের যাঁরা সুবিধা পেয়েছেন তাঁরা সকলেই ভোট দিয়েছেন। সমস্ত বেনেফিশিয়ারি এককাট্টা হয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। মায়াবতীও পক্ষান্তরে বিজেপিকে সমর্থন করেছেন। বিএসপির ভোটও পেয়েছে বিজেপি। সব মিলিয়ে এই ফলাফল বলেই আমার ধারণা।”
তবে কংগ্রেস যে ভাল ফল করতে পারেনি তাও অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, “কংগ্রেস ভাল করতে পারেনি। পঞ্জাব আমাদের ছিল। কিন্তু সেখানে সরকার বিরোধী একটা মানসিকতাও ছিল। তা ঠিক করার জন্য চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে সফল হয়নি। আপ জায়গা করে নিয়েছে। যদিও ওরা পঞ্জাবে বিরোধী দল ছিল।” অধীরের মতে, দিল্লিতে কৃষক আন্দোলন চলাকালীন আম আদমি পার্টির প্রচ্ছন্ন মদত ভোটবাক্সে কেজরীবালের দলকে এগিয়ে দিয়েছে।