মুর্শিদাবাদ: প্রতি বছর বর্ষা এলেই নদী ভাঙনের মুখে পড়ে মুর্শিদাবাদ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। একদিকে গঙ্গার ভাঙন, অন্যদিকে পদ্মার ভাঙন, দুইয়ের ভয়ঙ্কর রূপ ফি বছর ঘর, ক্ষেত ভাসিয়ে নিয়ে যায় মানুষগুলোর। বছর বছর এই এক ছবি সামশেরগঞ্জ, ভগবানগোলা, রঘুনাথগঞ্জের গ্রামগুলিতে। প্রকৃতির রোষ মোকাবিলা করা সহজ নয় ঠিকই। তবে এলাকার লোকজনের অভিযোগ, যেটুকু কাজ প্রশাসন অনায়াসেই করতে পারে সেটুকুও করে না। তাই বিপদও টলে না মোটে। শুক্রবার জেলা সফরে গিয়ে এই নদী ভাঙন নিয়ে সুর চড়ালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, প্রশাসনের কোনও নজরদারি নেই। কেন্দ্র টাকা দিলেও সেই টাকা লুঠ হয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ সামশেরগঞ্জের নিমতিতা বিএসএফ ক্যাম্পে যান দিলীপ ঘোষ। সেখানকার আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার পরই বোটে গঙ্গা ভাঙনে কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান তিনি। একইসঙ্গে ঘুরে দেখেন সীমান্তবর্তী এলাকাও। এরপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “ক’দিন আগে সুন্দরবনে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখলাম নদীবাঁধ ভাঙছে। দেখে এলাম কী ভয়ঙ্কর অবস্থা। এখানে নিমতিতায় বিএসএফের পোস্ট আছে। আশেপাশের গ্রাম শেখপুর, ধানগড়া, শিবপুর পদ্মতলা ভাঙন শুরু হয়ে গিয়েছে। ওপাশ থেকে বস্তা ভরে বালি এনে এপাশে ফেলা হচ্ছে।”
এরপরই দিলীপ ঘোষ বলেন, “২৪ কোটি টাকার প্রজেক্ট। অথচ বছর বছর বালি এনে ফেলা হচ্ছে, সে বালি জলেই চলে যাচ্ছে। টাকাও জলেই যাচ্ছে। অথচ বোল্ডার, পাথর দিয়ে বাঁধ তৈরি করলে কিন্তু এটা হয় না। গ্রামকে গ্রাম, আম লিচুর বাগান, বিএসএফের আউটপোস্ট জলের নিচে চলে যায় না। ব্যাপক হারে ভাঙন হচ্ছে এখানে। পাথর দিয়ে শক্ত স্থায়ী বাঁধ করলে এমন হয় না। আমার দেখার ইচ্ছা ছিল কী চলে এখানে। দেখে গেলাম। কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে, রাজ্য এভাবে খরচ করছে। আর স্থানীয় কিছু লোক লুঠ করে নিচ্ছে, যা প্রশাসন দেখছেও না। প্রতি বছর একটা লুঠের ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। ঝড় এলে যেমন আয় হয়, নদীর ধার ভাঙলেও আয় হয়। তাই স্থায়ী সমাধান কেউ করতে চায় না।”
এ প্রসঙ্গে জঙ্গিপুর জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান কানাইচন্দ্র মণ্ডল “দিলীপ ঘোষ তো রাজ্য থেকেই বিতাড়িত। তাঁর আবার কথার কী প্রতিক্রিয়া দেব? যা বলার রাজ্য নেতৃত্বই বলবে। উনি তো রাজ্যের বাইরে। ওনার যে এখানে কথা বলার কোনও এক্তিয়ার নেই ওনার দলই তো তা বলে দিয়েছে।”