মুর্শিদাবাদ: ২০১৯ সালের ঘটনা। মুর্শিদাবাদের ভরতপুর-১ ব্লকের একাধিক গ্রামে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সংশোধনের জন্য ঘুরে ঘুরে নথি সংগ্রহ করেছিলেন দুই যুবক। চার বছর পর সেইসব ব্যক্তিদের কাছ বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন থানা থেকে নোটিস আসছে বলে অভিযোগ। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। নোটিস পেয়ে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় তাঁদের। এই ঘটনায় বিডিওর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা। স্থানীয় সৈয়দকুলুট, সাহাপুর, মুনসুরপুর-সহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজন বুধবার বিডিওকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানান।
অভিযোগ, প্রায় চার বছর আগে একদল যুবক গ্রামে গ্রামে আধার কার্ড সংশোধনের নামে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। এদিকে আধার কার্ডের কাজ করিয়েছিলেন এমন বাসিন্দাদের অনেকের নামে সম্প্রতি আর্থিক প্রতারণা ও সাইবার ক্রাইম মামলার নোটিস আসছে। কারও ডায়মন্ড হারবার থানা, কারও আবার হাবড়া থেকে। শুধু এ রাজ্য থেকে নয়, ঝাড়খণ্ড, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, এমনকী দিল্লি থেকেও নোটিস আসছে বলে স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ। এমনকী জামিন অযোগ্য ধারায়ও মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
শারমিন খাতুন নামে এক তরুণী এই ফাঁদে পড়েছেন। তিনি জানান, “আধার কার্ডের সংশোধন হবে বলে দু’জন গ্রামে এসেছিলেন। ২০১৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। আমাদের কাছ থেকে নথি নিল। ৫০ টাকা নিলও। এখন ডায়মন্ড হারবার থানা থেকে নোটিস এসেছে। আমি নাকি ৫ লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছি। ভরতপুর থানার বড়বাবু গিয়ে আমাকে গত ২৫ তারিখ নোটিসটা দিয়ে আসেন। চার বছর পর এখন এসব বলছে। বলছে আমাদের নামে প্রতারণা কেস হয়েছে।” মুনসুরপুরের আজহার শেখের কথায়, “আমাকে হাবড়া থানায় ডেকেছিল। আমার কাছে জানতে চায় কী করি। আমি বললাম জনমজুরি করি। থানা বলছে আমি নাকি ১২ লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছি। আমার সঙ্গে আমাদের এক পঞ্চায়েত সদস্যও গিয়েছিলেন। উনিও শুনে অবাক।”
স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী খন্দেকার ফিরদৌস আহমেদ জানান, “২০১৯ সালে আধার, ভোটার কার্ড সংশোধন করবে বলে কিছু লোক গ্রামে যায়। এরাই কার্ড সংশোধন করবে বলে। তারা নথিও নেয়, সঙ্গে হাতের ছাপ। এরপরই বিভিন্ন থানা থেকে নোটিস আসছে। বলছে আত্মসমর্পণ করতে। কমবেশি ২৫ জনের এরকম নোটিস এসেছে। বিডিওকে লিখিত দেওয়া হয়েছে। উনিই সেটা থানার ওসিকে দেবেন। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড নথি হিসাবে নিয়ে পরে সেসব দেখিয়ে সিম কেনে। তারপরই এসব জালিয়াতি করেছে।”