মুর্শিদাবাদ: ভোটে জিততে না জিততেই দলবদল! গতকাল পূর্ব বর্ধমানের কালনায়। আর আজ মুর্শিদাবাদের দাদপুরে। দুই ক্ষেত্রেই একই ঘটনা। সিপিএমের টিকিটে ভোটে দাঁড়ানো, আর তারপর জিততে না জিততেই কাস্তে-হাতুড়়ি ফেলে ঘাসফুলে যোগ। দাদপুর অঞ্চলের গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সিপিএমের টিকিটে জিতেছেন নাসাফা সারবিন। জয়ের পর বিজয়োল্লাসেও মেতেছেন। আর আজ হঠাৎ করেই দলবদলে তৃণমূলে। শাসক দলের স্থানীয় ব্লক সভপতি আতাউর রহমানের হাত ধরে ঘাসফুলে যোগ দেন তিনি। সদ্য সিপিএমের টিকিটে জেতা নাফিসা বলছেন, ‘সিপিএম থেকে জিতেছি আমি। কিন্তু এখন উন্নয়নের স্বার্থে আমি তৃণমূলে যোগ দিলাম।’
সিপিএমের টিকিটে প্রার্থী। লাল-ঝান্ডা নিয়ে ভোটের প্রচার। তারপর ভোটে জিততে না জিততেই ‘কাস্তে-হাতুড়ি’-তে মোহভঙ্গ। এখন মানুষের উন্নয়নের জন্য তৃণমূলের সঙ্গে থেকেই কাজ করতে চান নাসাফা সারবিন। আজ সকালে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেওয়ার পর সেই বার্তাই দিলেন। গালে মাখলেন সবুজ আবিরও। ভোটে জিতে শাসক দলে যোগ দেওয়ার যেন এক ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। গতকাল যেমন কালনার গীতা হাঁসদা ভোট গণনাকেন্দ্রে ঢুকেছিলেন ‘কমরেড’ হয়ে। আর ভোটে জিতে গণনাকেন্দ্র থেকে বেরিয়েই সোজা তৃণমূলে। আবার বাঁকুড়া থেকেও এমন শাসক দলে নাম লেখানোর খবর এসেছে। বিষ্ণুপুর ব্লকের অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতে এক বিজেপি প্রার্থী ভোটে জিতে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে।
পঞ্চায়েতের আসরে এখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্ষিপ্তভাবে এমন দলবদলের হিড়িক দেখা যাচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটে এমনিতেই গ্রাম বাংলার দখল নিয়ে ফেলেছে তৃণমূল। তার মধ্যে বিরোধী প্রার্থীরা ভোটে জিতে শাসক শিবিরে নাম লেখাতে শুরু করেছে। এখন দেখার আগামী দিনে এই ধরনের ঘটনাগুলি কতটা প্রভাব ফেলে গ্রামীণ রাজনীতিতে।
মুর্শিদাবাদের ঘটনা নিয়ে এখনও পর্যন্ত বামেদের কোনও প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও কালনার ঘটনা প্রসঙ্গে গতকালই মুখ খুলেছিল বাম নেতৃত্ব। বামেদের দাবি ছিল, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল তাঁদের প্রার্থীদের। যদিও সেই দাবি অস্বীকার করেছে তৃণমূল।