রানাঘাট: একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েন অব্যাহত। এসবের মধ্যেই রাজ্য সরকার নিজে থেকে উদ্যোগী হয়ে একশো দিনের কাজের টাকা বিলি শুরু করেছে। কিন্তু সেখানেও অভিযোগ পিছু ছাড়ছে না। যাঁরা একশো দিনের কাজই করেননি, তাঁদের অ্যাকাউন্টেও টাকা ঢুকছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার রানাঘাট ব্লকের বারাসত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এই অভিযোগ তুলে আজ ‘বঞ্চিত’ গ্রামবাসীরা একজোট হয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, তাঁরা একশো দিনের কাজ করেছিলেন, কিন্তু সেই কাজের পুরো টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে না। এদিকে যাঁরা কোনওদিন কাজই করেননি, তাঁদের অ্যাকাউন্টেও টাকা ঢুকছে বলে অভিযোগ। কোনও কাজ না করেও, কোনওদিন মাঠে না নেমেও কারও অ্য়াকাউন্টে ২৭ হাজার, কারও অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার টাকা করে ঢুকেছে বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। এদিকে যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁদের কেউ ২০০ দিন, কেউ ৬০-৭০ দিন কাজ করেও পুরো টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ গ্রামের বিক্ষুব্ধ মহিলাদের। গ্রামবাসীদের দাবি, যাঁদের এরকম কাজ না করেও টাকা ঢুকেছে, তাঁরা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ এবং সেই কারণেই এমন হয়েছে বলে সন্দেহ গ্রামবাসীদের।
উল্লেখ্য, অতীতে আবাসের ঘর নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল নদিয়ার এই বারাসত গ্রাম পঞ্চায়েতে। সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিল এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেফালী বিশ্বাসের নাম। পাকা ঘর-বাড়ি থাকা সত্ত্বেও প্রধানের পরিবারের একাধিক জনের নাম উঠে এসেছিল আবাসের তালিকায়। সেই নিয়েও কম বিতর্ক হয়নি। তারপর এখন একশো দিনের কাজের টাকা বণ্টন ঘিরে গ্রামের মহিলাদের এমন অভিযোগকে ভোটের মুখে পুরোদমে কাজে লাগাতে ব্যস্ত বিজেপি। বিগত দিনে আবাসের তালিকা ঘিরে অভিযোগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে, একশো দিনের কাজের টাকা বিলির ক্ষেত্রেও তৃণমূলের সমর্থকদের ‘বাড়তি সুযোগ-সুবিধা’ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের।
একশো দিনের কাজের টাকা ঘিরে গ্রামবাসীদের এই অভিযোগ নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল বারাসাত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেফালী বিশ্বাসের সঙ্গেও। এক্ষেত্রে অবশ্য তাঁর অদ্ভুত যুক্তি। প্রধানের বক্তব্য, তাঁর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যতজনের জবকার্ড রয়েছে, তার থেকে বেশি মানুষ একশো দিনের কাজ করেছিলেন। বলেন, ‘১২৫৩ জনের জব কার্ড রয়েছে। সেখানে কাজ করেছেন ১৪৫৮ জন।’ প্রধানের প্রশ্ন, গত দুই বছর ধরে যখন কেন্দ্র একশো দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না, এতদিনে কেন কেউ এসে বলেননি যে তাঁরা টাকা পাচ্ছেন না? যে অভিযোগগুলি উঠে আসছে, তা কার্যত ভিত্তিহীন বলেই দাবি পঞ্চায়েত প্রধানের।