Chapra: তৃণমূল নেত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, গ্রেফতার ভিলেজ পুলিশ-সহ ৪
Chapra: নির্যাতিতা মহিলার স্বামী বাড়িতে থাকেন না। মা ও মেয়ে থাকেন বাড়িতে। নির্যাতিতার এফআইআর কপির বয়ান অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার রাতে মহিলা একাই বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, সে সময়ে অভিযুক্ত ভিলেজ পুলিশ মদ্যপ অবস্থায় তাঁর পথ আটকান। তাঁকে প্রথমে কুপ্রস্তাব দেন।

নদিয়া: তৃণমূল নেত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ। অভিযুক্ত ভিলেজ পুলিশ-সহ মোট চার জন। চাপড়া থানায় নির্যাতিতার এফআইআর, আর তার ভিত্তিতে গ্রেফতার চারজনই। কিন্তু তাতে দলের মধ্যে হুমকির শিকার নির্যাতিতা। অভিযোগ, দলেরই এলাকার নেতা তাঁকে এফআইআর প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছেন। ঘটনাকে ঘিরে শোরগোল নদিয়ার চাপড়ায়।
নির্যাতিতা মহিলার স্বামী বাড়িতে থাকেন না। মা ও মেয়ে থাকেন বাড়িতে। নির্যাতিতার এফআইআর কপির বয়ান অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার রাতে মহিলা একাই বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, সে সময়ে অভিযুক্ত ভিলেজ পুলিশ মদ্যপ অবস্থায় তাঁর পথ আটকান। তাঁকে প্রথমে কুপ্রস্তাব দেন। সেই কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায়, মহিলার শরীরের বিভিন্ন অংশে স্পর্শ করতে থাকেন বলে অভিযোগ। এরপর তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। কোনওক্রমে পালিয়ে বাড়িতে ঢুকে যান নির্যাতিতা। অভিযুক্তরা বাড়িতে চড়াও হয়। দরজায় লাথি মারতে থাকেন বলে অভিযোগ। দরজা কোনওক্রমে ভিতর থেকে চেপে রেখে নির্যাতিতা মেয়েকে বলেন থানায় ফোন করতে। খবর পেয়ে চাপড়া থানার পুলিশ গিয়ে নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে। চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। ধৃতদের মধ্যে একজন তৃণমূল নেতাও রয়েছেন।
কিন্তু এরপরের অভিযোগ আরও ভয়ঙ্কর। ভিলেজ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতারা ফোনে হুমকি দিতে থাকেন ওই মহিলাকে। অভিযোগ, চাপড়া ব্লক সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ ঘোষ ওরফে ট্রফি নির্যাতিতাকে এফআইআর তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। ঘটনার পর থেকে পলাতক ওই নেতা। চাপ তৈরি করেন এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল পঞ্চায়েতের প্রধান রুপালি দাসের শ্বশুরও। আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন নির্যাতিতা। অভিযুক্তদের কৃষ্ণনগর আদালতে পেশ করা হবে।
যদিও এক অভিযুক্তের বক্তব্য, “সামান্য কথা হয়েছে। এই অভিযোগটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওর (নির্যাতিতার) সঙ্গে আমার বউয়ের পরিচয় রয়েছে। আমার বউ রাতে আমাকে ফোন করে বলে, তুমি নাকি ওর (নির্যাতিতার) সঙ্গে ভাল ব্যবহার করোনি, আমাকে ফোন করেছিল, সেরকম হলে ক্ষমা চেয়ে নিও। আমি শুনছি আমার নামে অভিযোগ করেছে। পুরোটাই ষড়যন্ত্র।”
এই নিয়ে কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের ডিএসপি শিল্পী পাল বলেন, “শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ এসেছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। পদক্ষেপ করা হয়েছে। ভিলেজ পুলিশকে ডিমোবিলাইজ করা হয়েছে।”
রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, “এখন এই রাজ্য ধর্ষকদের রাজত্বে পরিণত হয়েছে। অভিযুক্ত চাপড়ার ভিলেজ পুলিশ, তার সঙ্গে তৃণমূল নেতা, আর যিনি নিগৃহীত তিনি তৃণমূল নেত্রী। আবার অন্যান্য তৃণমূল নেতারা ফোনে হুমকি দিচ্ছে, অনুরোধ দিচ্ছে, যাতে এফআইআর না করার। আসলে এটা তো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা।”
এলাকার বিধায়ক রূপবান রহমান বলেন, “আমি কলকাতায় এসেছি। আমি খবরটা শুনেছি। তাদেরকে আমি চিনি। কী করেছে, সেটা জানি না। দলের হোক, কিংবা বাইরের হোক. অন্যায় করলে আইন আইনের পথেই চলবে। ” বর্তমানে ভীষণভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নির্যাতিতা। ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন। কিছু একটা আতঙ্ক যেন তাড়া করে ফিরছে।

