নদিয়া: সন্ধেবেলায় ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি মা। শুক্রবার, জঙ্গলে মায়ের মৃতদেহ (Dead Body) আবিষ্কার করে ছেলে। গায়ে কাপড় নেই। প্রায় অর্ধনগ্ন সেই দেহটি কাপড়ের ফাঁস দিয়ে ঝুলছে গাছ থেকে। মাটিতে ঠেকে রয়েছে পা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি তেহট্টের নফরচন্দ্রপুর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে।
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, মৃত মহিলার পরনের একমাত্র শাড়িটি গায়ে ছিল না। বরং সেটি দিয়েই গলায় ফাঁস দেওয়া হয়েছিল। কেউ আত্মহত্যা করলে কেন নিজের পরনের শাড়িটি গলায় জড়িয়ে আত্মহত্যা করবেন তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। মৃতার ছেলের অভিযোগ, তাঁর মাকে ধর্ষণ (Woman Assault) করে খুন করা হয়েছে। মৃতার ছেলের কথায়, ”আমার মা গতকাল সন্ধেয় আমাদের পাশেরই লালবাজার এলাকার ছেলে সৌম্যজিত্ নামে একজনের সঙ্গে কথা বলছিল। তারপর ওরা মাকে ডেকে পাঠায়। মা যায়। সেই যে গেল তারপর থেকে আর খোঁজ পাইনি। আজ সকালে এসে দেখি এইভাবে মায়ের বডিটা ঝুলছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “মায়ের গায়ে শাড়ি ছিল না। শুধু ব্লাউজ আর সায়া। এইভাবে কি কেউ আত্মহত্যা করে! তখনই আমি সন্দেহ করেছিলাম। আমার মাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।”
এলাকার এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, “মহিলা অস্বাভাবিকভাবে ঝুলছিল। পাড়ার বৌ কেন ওমন করবে! আর যদি করেই থাকে তাহলে কি তার পা মাটি ছুঁয়ে থাকবে! এমনটাও কি সম্ভব! এটা ধর্ষণেরই ঘটনা। চাই দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।” ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তেহট্ট থানার পুলিশ। যদিও, মৃতার পরিবারের তরফ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
উল্লেখ্য, ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে নদিয়াতে রয়েছে সিবিআইয়ের একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল। তেহট্টেও হিংসা তদন্তেই স্পট ভিজিট সেরেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে খুন ও ধর্ষণের ঘটনাগুলির দায়ভার ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের হাতে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেখানে তেহট্টেই ফের এই ধরনের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে উঠছে প্রশ্ন।
আর দিন দশেক বাকি। তার মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার (Post Poll Violence Case) স্ট্যাটাস রিপোর্ট দিতে হবে সিবিআইকে (CBI)। সেই রিপোর্ট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে মোট ৮৪ জন তদন্তকারী অফিসার বা আইও-র মধ্যে ইন্সপেক্টর, ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার রয়েছেন। এছাড়া ২৫ জন কর্তা রয়েছেন এই দলে। জয়েন্ট ডিরেক্টর, ডিআইজি, এসপি পদমর্যাদার এই ২৫ জন অফিসার।
প্রত্যেক জোনের টিমে ২১ জন করে তদন্তকারী অফিসার বা আইও। ইতিমধ্যেই রাজ্যে পৌঁছেছেন ৪ যুগ্ম অধিকর্তারা। পৌঁছেছেন বেশিরভাগ ডিআইজি ও এসপি। রাজ্যে ১৫ টি খুন এবং ৬ টি ধর্ষণের মামলায় ২৭ অগাস্ট ১১টি এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। খুন, খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র রাখা, অপহরণ, অনুপ্রবেশের মতো একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআরগুলি দায়ের করা হয়। গত শনিবার আরও ১০টি এফআইআর দায়ের করা হয়। ২৯ অগস্ট আরও সাতটি এফআইআর দায়ের করা হয়। পরে আরও দুদফায় চারটি ও তিনটি এফআইআর দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: DVC on Flood: ‘মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ সঠিক নয়’, প্লাবন-পরিস্থিতিতে মুখ খুলল ডিভিসি
আরও পড়ুন: Krishna Kalyani Resigns From BJP: দল ছাড়লেন রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণকল্যাণী