নদিয়া: ধানতলাকাণ্ডে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ নেই ধর্ষণের কথা। নদিয়া ধানতলা থানার শঙ্করপুর এলাকায় এক নাবালিকার আত্মীয়ের বাড়িতে কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ ওঠে তারই জামাইবাবুর বিরুদ্ধে। বিরোধীরা সরব হন। দ্বিতীয়বারের জন্য ময়নাতদন্তের দাবি তোলেন পরিবার। গত বুধবার রানাঘাট হাসপাতাল ও শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের রিপোর্ট আসে ধানতলা থানার পুলিশের কাছে। দুটি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কোনওরকম ধর্ষণ-খুনের কথা উল্লেখ করা হয়নি। বুধবার সন্ধ্যাতেই জেলা পুলিশের কাছে সেই রিপোর্ট জমা পড়ে। এর আগে রানাঘাট হাসপাতালে এক বার ময়নাতদন্ত হয়েছিল। পরিবারের তরফে ধর্ষণ করে খুনের মামলা দায়ের করা হয়। এরপর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ফের ময়নাতদন্ত করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, দুটি রিপোর্টের একটিতেও ধর্ষণ করে খুনের কথা উল্লেখ নেই।
ঠিক কী ঘটেছিল?
নদিয়ার হাঁসখালির ঘটনা নিয়ে যখন উত্তার রাজ্য, তখন সেই জেলাতে ধানতলাএক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তারপরই তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ তোলে পরিবার। আর সেই ঘটনায় এবার ভাইরাল হয় একটি অডিয়ো ক্লিপ। সেখানে শোনা যায়, একজন আর একজনকে বলছেন, ‘কমপ্লেন্ট চেঞ্জ করার জন্য চাপ দিতে হবে।’ অভিযোগ পরিবর্তন করার কথা কারা বলছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওসি-র ওপর চাপ তৈরি করার কথাও বলা হচ্ছে সেই অডিয়ো ক্লিপে। তৃণমূলের দাবি আসলে এর পিছনে রয়েছে বিজেপির ষড়যন্ত্র। ফের উঠল ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ।
জামাইবাবুর বাড়ি থেকে কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। নদিয়ার গাংনাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। চড়ক পুজোর মেলা উপলক্ষে ধানতলা এলাকায় পিসতুতো জামাইবাবুর বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল সে। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে ঝুলন্ত অবস্থা দেখতে পায় জামাই বাবুর পরিবার। এরপর তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় রানাঘাট মহাকুমা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর উপস্থিতিতে থানায় আবার অভিযোগ দায়ের করা হয় যে, তাকে মাদক খাইয়ে ধর্ষণ করে খুন করা হয়।
নাবালিকার মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর মৃতদেহ ঘিরে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ চলে গাংনাপুর থানার অন্তর্গত ঘোলা এলাকায়।রাতে ঘটনাস্থলে যায় গাংনাপুর থানার পুলিশ। গাংনাপুর থানার পুলিশকে ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘক্ষণ ধরে বিক্ষোভ করেন। এই ঘটনা নিয়ে মুকুটমনি অধিকারী রাজ্যের শাসক দল ও মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন। সেই ঘটনারাই ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের কথা উল্লেখ নেই। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘প্রয়োজনে সিবিআই তদন্ত করা হোক।’