নদিয়া : পাঁচ দিনেই বদলে গিয়েছে সবকিছু। গরমের ছুটির আগে পর্যন্ত স্কুলে গিয়েছেন। কিন্তু, গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে চাকরি গিয়েছে ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষকের। জানা গিয়েছে, সেই তালিকায় রয়েছেন নদিয়ার ১৪ জন। হাইকোর্টের নির্দেশের পর তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কারও বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, দরজা বন্ধ। আবার কোনও পরিবার দাবি করল, টাকা দিয়ে চাকরি পায়নি তাদের বৌমা।
২০১৪ সালে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের জন্য পরীক্ষা হয়েছিল। ২০১৬ সালে নিয়োগের প্রথম প্যানেল প্রকাশিত হয়। তারপর ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় তালিকা। সেখানে ২৬৯ জন প্রার্থীর নাম ছিল। সেই ২৬৯ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, ওই ২৬৯ জনের মধ্যে নদিয়ার ১৪ জন রয়েছেন।
তেহট্টের ত্রিপুরাপাড়ার বাসিন্দা শিল্পা চক্রবর্তীর নাম রয়েছে ওই তালিকায়। তিনি তেহট্ট বয়েজ প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁর বাড়িতে গেলে, কেউ কথা বলতে চাইলেন না। তাঁরা বললেন, আগামিদিনে তাঁরা আদালতে যাবেন। তারপর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন। করিমপুরের সুমিত বিশ্বাস ও প্রিয়রঞ্জন সাহার নাম রয়েছে তালিকায়। তাঁদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া গেল না। দরজা বন্ধ রয়েছে।
কল্যাণীর বাসিন্দা ঐশ্বর্য গিরি। তাঁরও নাম রয়েছে চাকরি বাতিলের তালিকায়। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বলেন, ঐশ্বর্য বাবার বাড়িতে গিয়েছেন। তবে তাঁরা দাবি করেন, তাঁদের বৌমা পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছে। চাকরির জন্য কোনও টাকা দেয়নি। রানাঘাটের বাসিন্দা ননীগোপাল সরকার। কুঠুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করতেন। তাঁরও নাম রয়েছে তালিকায়। তাঁর বাড়িতে গেলে কেউ কথা বলতে চাইলেন না।
মদিনদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন ঐশ্বর্য গিরি। ওই স্কুলের এক প্যারা টিচার বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশের পর আমি ওই শিক্ষিকাকে ফোন করেছিলাম। তিনি স্বীকার করেছেন তালিকায় যে নামটা রয়েছে, তা তাঁর। এটা শুনে আমি অবাক হয়েছি। যদি টাকা দিয়ে চাকরি পেয়ে থাকেন, তাহলে পড়ুয়াদের সঙ্গে তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।”
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, আদালত ২৬৯ জনের চাকরি বাতিল করেছে। তার অর্থ দুর্নীতি হয়েছে। কারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের খুঁজে বের করা উচিত। তাঁদের দাবি, যাঁরা যোগ্য প্রার্থী, তাঁদের চাকরি দেওয়া হোক।