নদিয়া: মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে রাস্তায় উলঙ্গ করে উত্যক্ত করা ও পরে বাঁশ দিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠল বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে। অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার তেহট্ট থানার হরিপুর এলাকায়। গোটা ঘটনাটি রাস্তার একটি সিসিটিভি ক্যামেরাবন্দী হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে নির্যাতিতার পরিবার। তদন্ত শুরু করলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্তরা পলাতক। এ দিকে, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলা চিকিৎসাধীন বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে ১৭ অগস্ট বুধবার। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতার পরিবার। তাদের অভিযোগ, আট বছর আগে স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ওই মহিলার। কিন্তু কয়েক বছর পর বিভিন্ন মানসিক সমস্যা দেখা দেয় তাঁর। তাই কয়েক মাস আগে চিকিৎসার জন্য বাপের বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ঘটনার দিন সকলের অলক্ষে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। রাস্তা দিয়ে একাই হেঁটে এগিয়ে যান বেশ কিছুটা। সেই সময় ওই রাস্তা দিয়েই উল্টো পথে আসছিল দুই অভিযুক্ত। সম্পর্কে তারা বাবা-ছেলে। প্রথমেই তাঁরা ওই মহিলাকে বিভিন্ন কুরুচিকর মন্তব্য করে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। যার প্রতিবাদ করেন মহিলা।
অভিযোগ, সেই সময় অভিযুক্ত ছেলে ওই মহিলার পরনের পোশাক খুলে নেয়। শ্লীলতাহানির পাশাপাশি চলতে থাকে অশালীন মন্তব্য। এখানেই থেমে থাকেনি বাবা ছেলের অমানবিক ও মধ্যযুগীয় আচরণ। প্রকাশ্য রাস্তায় ওই মহিলাকে উলঙ্গ করে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন তারা। শেষমেশ মারের চোটে অজ্ঞান হয়ে যায় নির্যাতিতা। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বহরমপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। নির্যাতিতার এক আত্মীয় বলেন, ‘মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ওকে বিরূপ মন্তব্য করা হয়। প্রতিবাদ করতে না পারায় খুলে ফেলা হয় তার সম্পূর্ণ পোশাক। বাঁশ দিয়ে মারার সময় নির্যাতিতা অজ্ঞান হয়ে গেলেও তাঁকে মারধর করা থামায়নি অভিযুক্ত বাবা ছেলে।’ যুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছে নির্যাতিতার স্বামীও। এদিকে, গোটা ঘটনাটি ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরাতেও (যার সত্যতা যাচাই করেনি TV9 বাংলা)।
পুলিশের দাবি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও খুনের চেষ্টার মামলা রুজু হয়েছে। যদিও তাঁরা পলাতক। তাঁদের খোঁজেই আপাতত তল্লাশি চলছে।