নদিয়া: প্রায় কোটি টাকার ব্যয়ে তৈরি হয়েছিল হাইড্রেন। কিন্তু কয়েক দিন যেতে না যেতেই তা ভেঙে উল্টে গেল গাড়ি। ড্রেন নিয়ে ফের দুর্নীতির অভিযোগে সরব এলাকাবাসী। প্রতিবাদে সরব রাজনৈতিক মহলও।
এদিকে, এলাকাবাসীর দাবি কাটমানি দিয়েই নিম্নমানের সামগ্রী কিনে কোটি টাকার প্রকল্পের হাইড্রেন তৈরি করেছে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। যদিও পুরসভার জনপ্রতিনিধিদের দাবি, সঠিক নিয়মে কাজ হয়েছে। ঘটনাটি নদিয়ার শান্তিপুর থানার আলুর মাঠ এলাকার। জানা গিয়েছে, ওই এলাকার দালাল পাড়া লেন সংলগ্ন রাস্তায় প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা একটি হাইড্রেন তৈরি হয়েছে। শান্তিপুর পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থা বরাবরই খারাপ। সেই কারণেই সরকারের প্রকল্পে পুরসভার তত্ত্বাবধানে রাস্তার মাঝখান দিয়ে একটি হাইড্রেন তৈরি করা হয়েছে ওই এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন একটি বালিবোঝাই লরি আসছিল ওই রাস্তা দিয়ে। কিন্তু হাইড্রেন হঠাৎ ভেঙে উল্টে যায় লরিটি। এলাকাবাসীর দাবি, যাঁরা চুক্তি নিয়ে হাইড্রেন তৈরি করেছিলেন, সেই সময় তাঁরা দাবি করেছিলেন এই রাস্তা দিয়ে প্রায় ৮০ টনের গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে একটি বলি বোঝাই গাড়ি যেতে গিয়েই হাইড্রেন ভেঙে সেটি উলটে গিয়েছে। ফলে দিন কয়েক আগে সম্পূর্ণ হওয়া নতুন ড্রেনের যদি প্রথমেই এই অবস্থা হয়, তাহলে পুরনো হলে তার হাল কী হবে?
এর পাশাপাশি স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মূলত টাকার দুর্নীতি করে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে এই হাইড্রেন তৈরি করা হয়েছে। সেই কারণেই এমন দুর্ঘটনা। সিপিআইএম নেতা সৌমেন মাহাত বলেন, ‘শাসকদলের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত প্রতিটি নেতার দুর্নীতিগ্রস্ত।’ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, শান্তিপুরের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি জলনিকাশী ব্যবস্থার সমাধান করতে হবে। সরকারি যে প্রকল্প সেই অনুযায়ী কাজও হয়েছে। কিন্তু কয়েক দিন যেতে না যেতেই ভেঙে পড়ল। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ড্রেন তৈরি হচ্ছে। বিপুল পরিমাণ কাটমানি জেরেই এই নিম্নমানের এই সামগ্রী দিয়ে হাইড্রেনটি তৈরি হয়েছে। এই ঘটনা চলতে থাকলে দুর্ঘটনা আরও বাড়বে। যদিও, তাঁর দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেছেন, সম্পূর্ণ নিয়ম মেনেই ওই হাইড্রেনটি তৈরি করা হয়েছে। এর সঙ্গে কোনও দুর্নীতির সম্পর্ক নেই। তবে বালির গাড়িতে অতিরিক্ত ওজন হওয়ার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।