কলকাতা: দু’বেলা খাবার খাচ্ছিলেন। কিন্তু সেই খাবার আর পেট পর্যন্ত ঢুকছিল না। গলা দিয়ে খাবার ঢোকার পরই কোথায় যেন তা ‘গায়েব’ হয়ে যাচ্ছিল। পাকস্থলী পর্যন্ত সেই খাবার আর কিছুতেই গিয়ে পৌঁছাচ্ছিল না। এক জটিল ব্যাধির মধ্যে পড়েছিলেন শান্তিপুরের অমিত সরকার। বছর বাষট্টির ওই বৃদ্ধের গলায় এক জটিল রোগ হয়েছিল। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলে জিঙ্কারস ডাইভার্টিকুলাম। রোগের প্রধান উপসর্গ, গলায় একটি অতিরক্তি থলির সৃষ্টি হয়েছিল। যে কারণে, তিনি মুখ দিয়ে যাই খাবার খাচ্ছিলেন সেটা পাকস্থলী পর্যন্ত যাওয়ার আগেই ফিরে আসত।
পেশায় রাজমিস্ত্রী ওই বৃদ্ধ শেষে নদিয়ার কল্যাণী মেডিকেল কলেজ ও জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে আসেন চিকিৎসা করাতে। ভর্তি হন ইএনটি বিভাগে। তাঁর শারীরিক পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে চিকিৎসকরা জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি জটিল রোগে আক্রান্ত। ডাক্তারবাবুরা জানান, অস্ত্রোপচার করতে হবে। অস্ত্রোপচার না করা গেলে এই জটিল রোগের নিরাময় সম্ভব নয়। সেই মতো জটিল ও বিরল ওই রোগ নিরাময়ের জন্য অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক ইন্দ্রনীল পাল, চিকিৎসক সৌমিত্র কুমার ও অন্যান্য চিকিৎসকদের একটি টিম মঙ্গলবার অমিতবাবুর গলার অস্ত্রোপচার করেন। সফল অস্ত্রোপচারের পর বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন তিনি। অমিত সরকার জানাচ্ছেন, তিনি এখন ঠিকভাবে খাবার খেতে পারছেন। খাবার খাওয়ার পর সেটা আর গলার ভিতর থেকে ফেরত আসছে না। এই বিষয়ে কল্যাণী মেডিকেল কলেজ ও জওহরলাল নেহরু হাসপাতালের অধ্যক্ষ চিকিৎসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, সরকারি হাসপাতালে এই ধরনের অস্ত্রোপচার ব্যতিক্রমী। তাছাড়া, বাইরে এই অস্ত্রোপচার করাতে যেখানে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হত, সেখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এখানে তা করা হয়েছে।