নদিয়া: আইপিএল খেলায় বাজি ধরা ছিল নেশার মতো। কিন্তু সেই নেশাই হল কাল। নেশার ঘোরে সব খুইয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ায় মর্মান্তিক পরিণতি যুবকের। ঘর থেকে উদ্ধার হল যুবকের ঝুলন্ত দেহ। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, আইপিএল খেলায় বাজি ধরে টাকা খুইয়ে মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁদের ছেলে। মর্মান্তিক ঘটনা নদিয়ার শান্তিপুরের ফুলিয়া চটকাতলা এলাকায়। মৃতের নাম সঙ্গম মজুমদার (৩৪)।
সঙ্গম বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার ছুটি ছিল তাঁর। রাতে দোতালায় নিজের ঘরে বসেই টিভিতে খেলা দেখছিলেন তিনি। ছেলেকে খেলা দেখতে দেখেছিলেন মাও। এরপর তিনি নীচে রান্না করতে চলে যান। রাতে টেবিলে খাবার দিয়ে ডাকতেও বলেছিলেন সঙ্গম, তেমনই জানাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা।
রাতে খাবার দেওয়ার পর তাঁকে দীর্ঘক্ষণ ধরে ডাকা হয়। সাড়া না মেলায় বাড়়ির লোক দোতলার ঘরের দরজা খুলে দেখেন সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন সঙ্গম। ততক্ষণে খবর ছড়িয়ে পড়ে পাড়াতেও। তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে ফুলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, ওই যুবক মাঝেমধ্যেই আইপিএল খেলায় বাজি ধরতেন। এর আগে আইপিএল খেলায় বাজি ধরে অনেক টাকা খুইয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে আইপিএল খেলার শেষে সঙ্গম আরও হয়তো মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তাতেই এই পরিণতি। অন্তত তেমনই মনে করছেন বাড়ির সদস্যরা।
এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ফুলিয়া থানার পুলিশ। এই মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মঙ্গলবার মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার পর থেকে কথা বলার শক্তি হারিয়েছেন সঙ্গমের মা। পরিবারের এক সদস্য বলেন, “আমরা তো কিছুই বুঝতে পারছি না। খেলা দেখতে খুব মন দিয়ে। পাগলের মতো খেলা নিয়ে করত। কিন্তু এই নেশা যে মারাত্মক, তা আমরা আগেও বুঝিয়েছিলাম। টাকা লাগাত। সব হেরে হয়তো ভেঙে পড়েছিল। খুব চাপা ছিল তো, কাউকে কিছুই বলত না।”