নদিয়া: নার্স বলছেন, ‘দেখছেন তো ফোনে কথা বলছি…’, আবার ডাক্তার বললেন, ‘এই তো দেখুন আমি লিখিনি দিতে…’ দু’জনই ক্যামেরা দেখে থতমত খেয়ে গেলেন। কেন? যে বিষাক্ত স্যালাইন নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে গোটা রাজ্যে। সেই স্যালাইন ফের দেওয়ার অভিযোগ উঠল রোগীকে। তাও আবার সরকারি হাসপাতালেই। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে বিষাক্ত স্যালাইনের জেরে প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ আসতেই স্যালাইন প্রস্তুতকারী সংস্থার ওই স্যালাইন-সহ একাধিক ওষুধ পশ্চিমবঙ্গে ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল স্বাস্থ্য ভবন। তবে নদিয়ার পলাশিপাড়া থেকে এল বিস্ফোরক অভিযোগ। নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও ফের পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের সেই নিষিদ্ধ স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে রোগীকে। প্রশ্ন করতেই ডাক্তার এবং নার্সের মধ্যে শুরু হয় একে অপরকে দোষারোপ। ঘটনাটি ঘটেছে পলাশিপাড়া প্রীতিময়ী গ্রামীণ হাসপাতালের ঘটনা। শেষে টিভি ৯ বাংলার ক্যামেরা দেখেই রোগীর শরীর থেকে সেই স্যালাইন খুলে দিলেন স্বাস্থ্য কর্মীরা।
কয়েকদিন আগেই নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের সমস্ত স্যালাইন তালা বন্ধ করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিষ্কার জানানো হয় তা ব্যবহার করা যাবে না। এরপরও যদি কোনও হাসপাতাল এই স্যালাইন ব্যবহার করেন তাহলে তার সব দায় সেই হাসপাতালে সুপারকে নিতে হবে। তা সত্ত্বেও এ দিন পলাশীপাড়া প্রীতিময়ী গ্রামীণ হাসপাতালে দেখা গেল ওই কোম্পানির স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে রোগীকে। এখন প্রশ্ন উঠছে বারবার বারণের পরও কীভাবে এই স্যালাইন ব্যবহার করা হচ্ছে? কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেলে তার দায় নেবে কে? উঠছে প্রশ্ন। চিকিৎসক বি গাইন বলেন, “বিএমওএইচ জিজ্ঞাসা করুন। আর শুনুন আমি অর্ডার দিইনি। ক্যান্সেল করে দিলেই হল। আমি তো দিইনি। নার্স কোনও ভাবে ভুল করেছে হয়ত।” আবার কর্তব্যরত নার্স বলেন, “ডাক্তারবাবু বলেছে বলেই তো দেওয়া হয়েছে…।” এরপর আর একটিও কথা বললেন না।
এ দিকে রোগীর পরিবারের লোকজন বললেন তাঁরা জানেনই না। সত্যিই তো সাধারণ মানুষ রোগীকে সুস্থ করতে হাসপাতালে নিয়ে আসে। ভরসা নার্স ও ডাক্তাররা। কিন্তু তারাই যদি কর্তব্যে গাফিলতি করে তাহলে কোথায় যাবে সাধারণ মানুষ? আত্মীয় মৌসুমী খাতুন বলেন, “ডাক্তারবাবু না নার্স দিয়েছে জানি না। রোগী অসুস্থ হলে আমরা হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানে কী হয় বা কী হয় না আমরা তো জানি না। কোন ওষুধ দিচ্ছ না দিচ্ছে বলব কীভাবে?”