রামনগরে জেপি নাড্ডা।
নদিয়া: দ্বিতীয়বারের জন্য বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি হলেন জগৎপ্রকাশ নাড্ডা (JP Nadda)। এই পদে বসার পর বৃহস্পতিবার তাঁর প্রথম বঙ্গসফর। সেই সভায় জেপি নাড্ডার সঙ্গে রয়েছেন বঙ্গ বিজেপির প্রথম সারির তিন মুখ দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার। এদিন বক্তব্যের শুরুতে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আজকের এই সমাবেশ বার্তা দিচ্ছে, কৃষ্ণনগরের সাংসদ প্রাক্তন হয়ে যাবেন। আর মাত্র কয়েকটা মাসের অপেক্ষা। এই সাংসদ তো আপনাদের জন্য কোনও কথা সংসদে বলেন না। তিনি আমেরিকার কথা বলেন, তিনি জার্মান, রাশিয়া, ইউক্রেনের কথা বলেন। তিনি কৃষ্ণনগরের কথা বলেন না। চব্বিশে সুদে আসলে হিসাব তুলবেন তো?”
- আমাদের প্রধানমন্ত্রী শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা ৬০০ কিলোমিটার নেতাজি মার্গ দিয়েছেন, নদিয়ার কল্যাণীতে এইমস দিয়েছেন, বন্দে ভারত দিয়েছেন। কেন্দ্রের প্রকল্পেই বাংলার ৭০ লক্ষ বাড়ি শৌচালয় পেয়েছে। এই চোর তৃণমূল সবই খেয়ে ফেলেছে। তাই আপনারা কেউ এর সুযোগ পাননি। : শুভেন্দু
- পশ্চিমবঙ্গে ৪ কোটি বাড়ির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৪০ লক্ষ বাড়ি আগে বরাদ্দ হয়েছিল। এবার ১১ লক্ষ ২৬ হাজার বাড়ি আমাদের প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। কৃষক সম্মান নিধি পান কৃষকরা। পঞ্চায়েতে আওয়াজ তুলুন ৭৩ লক্ষ কৃষক পরিবারকে টাকা দিতে হবে। ভারত সরকার রাজি, এই সরকার নাম পাঠাচ্ছে না। : শুভেন্দু
- আমরা গ্রামে গ্রামে ‘আমার অধিকার, আমার ১০০ দিনের কাজের’ দাবি তুলব। এখনও ৮০ লক্ষ জব কার্ড এখনও আধারের সঙ্গে লিঙ্ক হয়নি। হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি হয়েছে। আবাস যোজনার টাকা কাটমানি খাওয়া হয়েছে। তাই গোটা বাংলা বলছে চোর ধরো। উৎখাত করতে হবে এদের। : শুভেন্দু
- মোদীজী ১৪ সালে আসার আগে ভারতে ভোট হতো পরিবারবাদ, জাতপাত আর তোষণের ভিত্তিতে। শেষ করে দিয়েছেন। এখন দু’টো জায়গা বাকি আছে, এক তেলঙ্গনা। তুষ্টিকরণ আর পরিবাদ, কেসিআর তাঁর পুত্র কেটি রামারাও আর আসাউদ্দিন ওয়াইসি। ওকেও গণতান্ত্রিকভাবে খতম করতে হবে। দ্বিতীয় বাংলা। পশ্চিমবঙ্গ পরিবারতন্ত্র, পরিবারবাদ, তুষ্টিকরণ আর কাটমানি, সিন্ডিকেটরাজে চলছে। এগুলোকেও খতম করতে হবে। : শুভেন্দু
- নাড্ডাজীর কথা অনেকক্ষণ শুনব। আমি তো আপনাদের ঘরের ছেলে। যখন ডাকবেন চলে আসব। পঞ্চায়েত উত্তাল করব, আর গণতান্ত্রিকভাবে পঞ্চায়েতের ভোট যাতে হয় আমরা তার ব্যবস্থা করব। আঠারোর ভোট হবে না, তেইশের ভোট হবে। কারণ আঠারোতে বিরোধী দল ছিল কংগ্রেস আর সিপিএম। আজকের বিরোধী দল হল বিজেপি। : শুভেন্দু
- এই যে এখানে আপনারা এত মানুষ এসেছেন, কারও মুখে মাস্ক নেই। সকলে কাছাকাছি বসে আছেন। এই ছবি আপনারা দেশের আর কোথাও দেখতে পাবেন না। আমেরিকায়ও না, চিনেও না। সেসব দেশ এখনও করোনার সঙ্গে লড়াই করছে। কিন্তু আমাদের দেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে টিকা নিয়ে স্বাস্থ্য়ের কবচ পরে বসে আছেন। এটাই পরিবর্তনের ভারত। একটা সময় ছিল এ দেশে পক্সের টিকা আসতে ২৫ বছর সময় লেগে গিয়েছে। পালস পোলিওর কর্মসূচি নিতে ৩০ বছর সময় লেগেছে। কিন্তু আসার পর ৯ মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটা নয়, দু’টি টিকা ভারতে তৈরি হয়েছে। আপনাদের দেওয়া হয়েছে। আজ ভারত ১০০টি দেশকে ভ্যাকসিন প্রদানকারী দেশ হয়েছে। : জেপি নাড্ডা
- এর মধ্য়ে ৫০টি দেশকে নিখরচায় প্রদান করা হয়েছে। কেউ কখনও ভেবেছিল ভারত ‘দেনেওয়ালা ভারত’ হবে? ভারত সবসময় ‘লেনেওয়ালা ভারত’ ছিল। মোদীজীর নেতৃত্বে এই বদল। : জেপি নাড্ডা
- এখন হাতে হাতে মোবাইল ফোন। ২০১৪ সালে ৫২ শতাংশ মোবাইল বাইরে থেকে আসত। ২০২২ সালে ৫৭ শতাংশ মোবাইল ফোন ভারতে তৈরি হয়। ভারত বিশ্বকে দিতে পারে। অ্য়াপেলের মোবাইলেও লেখা আছে মেড ইন ইন্ডিয়া। : জেপি নাড্ডা
- কংগ্রেস সরকারের আমলে প্রতিরক্ষায় শুধুই ভ্রষ্টাচার হতো। হেলিকপ্টার কেনা থেকে যা কিছু কেনা হোক দুর্নীতি। শুনে খুশি হবে, এখন ভারত প্রতিরক্ষায় রফতানি করছে কয়েক গুণ বেশি। বিশ্বকে ভারত দিচ্ছে। : জেপি নাড্ডা
- আমরা অর্থনীতিতে ১০-এ থাকতাম। আজ বিশ্ব যখন করোনার সঙ্গে লড়ছে, ইউক্রেনের লড়াই দুনিয়াকে সাপ্লাই চেনে বিব্রত করছে, তখন ভারত ব্রিটেনের থেকেও এগিয়ে গিয়ে অর্থব্যবস্থায় ৫ নম্বরে। : জেপি নাড্ডা
- আজ অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রিতে জাপানকে পিছনে ফেলে তিন নম্বর ভারত। অথচ একটা সময় নামজাদা গাড়ির কথা উঠলে জাপানের গাড়ির নামই সকলে বলতেন। আমাদের আগে এখন আমেরিকা আর চিন। এভাবেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে : জেপি নাড্ডা
- আবাস যোজনার কথা হচ্ছে। আমি ১৯৯৩ সালে বিধায়ক হয়েছি। সেইসময় আমার বিডিও এসে বলতেন, ২টো পঞ্চায়েতে ১ আবাস যোজনা পাওয়া যাবে। কোথায় দেব বলুন? আমি বলতাম, ২টি পঞ্চায়েতে যদি ১টা ঘর পাওয়া যায়, সেটা আপনি আপনার কাছেই রেখে দিন। আজ মোদীজীর সময় ৩ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাকা ঘর পেয়েছেন। : জেপি নাড্ডা
- তবে কয়েকটা কথা দুঃখের সঙ্গে আপনাদের বলতেই হচ্ছে। এখানে আবাস যোজনার টাকাও খেয়ে নিয়েছে। আমার বলতে খারাপ লাগছে, এখানে শৌচালয়ের পয়সাও খেয়ে ফেলেছে। মনরেগাতেও এখানে ভ্রষ্টাচার হয়েছে। বলতে খারাপ লাগছে, এটা বাংলার কী অবস্থা? দিদি আপনি বাংলার কী অবস্থা করেছেন? : জেপি নাড্ডা
- একটু আগেই সুকান্ত মজুমদার বলছিলেন, এখানে গরু, বালি, কয়লা সবই খেয়ে ফেলেছে এরা। এমনকী শৌচালয়ও ছাড়েনি। আপনাদের বাংলা ভাষাতেই বলছিল, শুনলাম। পয়সা পাঠাচ্ছেন মোদীজী আর তুমি এখানে দুর্নীতি করছ? আর যখনই তদন্ত হবে, বলবে সরকার শত্রুতা করছে। চুরিও করবে, গায়ের জোরও খাটাবে? : জেপি নাড্ডা
- শুভেন্দু অধিকারী বলছিলেন, ধরো ধরো চোরকে ধরো। জেলে ভরো। পদ্মে ছাপ দাও, চোর ধরেও দেব, জেলে ভরেও দেব। পদ্মে ভোট দিন, বাকিটা দেখে নেব। : জেপি নাড্ডা
- কেন্দ্র টাকা পাঠায়, এখানে দুর্নীতি হয়। আর তদন্ত হলেই মোদী সরকারের নামে বলতে থাকে। মোদী সরকার সততার সরকার, আপনার সরকার বেইমানের সরকার, এটা বুঝতে হবে। মোদীজী লালকেল্লা থেকে বলেছেন, ভ্রষ্টাচারীদের আমরা ছাড়ব না। জেলে ঢুকিয়ে তবেই শান্তি পাব। : জেপি নাড্ডা
- শুভেন্দু অধিকারীকে এখানে বিচারপতির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিতে হয়। বিচারপতিও বলেন, শুভেন্দু অধিকারীকে অন্যায়ভাবে বিরক্ত করা হচ্ছে। এটা বললে আবার তৃণমূলের কর্মীরা বিচারপতির বিরুদ্ধেও দাঁড়িয়ে পড়েন। বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে সুর চড়ান। : জেপি নাড্ডা
- আবাস নিয়ে তদন্ত হলে রেগে যান। আপনারা বলেন কাজ করতে দিচ্ছে না। মনরেগায় কৃষকদের টাকা খাওয়ার তদন্ত হলে তাতেও চিন্তায় পড়ে যান। এখানে সবথেকে বেশি মানব পাচার হয় কি না বলুন? সবথেকে বেশি মহিলাদের উপর অত্যাচার হয় কি না বলুন? : জেপি নাড্ডা
- এসব থেকে মুক্তির একটাই রাস্তা, তা হল বিজেপি। তা পঞ্চায়েত ভোট হোক বা লোকসভা ভোট। বলুন, লোকসভা ভোটে এখানে পদ্ম ফুটবে কি না? : জেপি নাড্ডা
- একটা বৈঠকে দিদি আমার পাশে বসেছিলেন। আমি বললাম, দিদি এত রেগে যাবেন না। আপনি সংবিধান মেনে কাজ করুন, নিয়ম অনুযায়ী চলুন, দুর্নীতির সঙ্গ ছাড়ুন। আপনাকে ভগবান সুযোগ দিয়েছেন। : জেপি নাড্ডা
- আমি দিদিকে বলতে চাই, দিদি এত রাগ করো না। স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়। : জেপি নাড্ডা
- রাজনীতিতে যাওয়া আসা লেগেই থাকে। যে কোনও সময় যা কিছু হয়। আমরা সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের সময় থেকে দেখছি। সিপিএমের জমানাও দেখেছি। আপনারও জমানা দেখছি। বাংলার মানুষ এবার পদ্মের জমানা দেখার জন্য আকুল। : জেপি নাড্ডা
- নরেন্দ্র মোদীর সকলের জন্য চিন্তা রয়েছে। যদি বাংলার কথা বলি, আমি আয়ুষ্মান ভারতের কথা বলব। গরীব মানুষের নিখরচায় চিকিৎসার জন্য এই প্রকল্প। কিন্তু দিদি বলেন, হবে না। করতে দেবেন না। : জেপি নাড্ডা